বুধবার, জুলাই ১৬, ২০১৪

বিষের পেয়ালায় পোড়া দেশ


(রোমানাকে)

এমন বৃষ্টি হয়নি বহুকাল
শুরু হলো তোমাদের হাঘরে আকাল
বৃষ্টি, একগুঁয়ে ছন্নছাড়া অবিশ্রাম তুমুল
কদিনেই কাজ নেই, ঘর ও প্রান্তর বদলালো আমূল;
অন্ধকারে ঝাপসা আলো রুদ্ধ পথঘাট
কোথায় পালাবে তুমি, চৌদিকে আবদ্ধ কপাট,
কে তোমাকে দিতে পারে প্রাণের সাম্পান
কে তোমাকে দিতে পারে বুকভরা গান
তোমার চোখ ভরা এতো আভিমান;
দখিনের গাছগুলো দুলছে হাওয়ায়
চতুর্দশি ছিলে তুমি পূর্ণ কামনায়
কুমারি শরিরে তুমি পাওনিকো জীবনের স্বাদ
দেখেছিলে তালবন তালশাঁস, অনভিজাত
বাড়ির পাশে ঝোঁপে-ঝাড়ে বেঁচে থাকা
অজস্র কীট মানুষ নামের, তুমি তাদের থেকে ঢের বেশি একরোখা
ভালোবাসায় জন্ম নেয়া একুশ শতকের নারী
তুমি জান কি, তোমার মতোই দেহের তোমার প্রধানমন্ত্রি;
সেও পারেনি তোমাকে বাঁচাতে;
তোমার মা তো সামান্য এক বধু সংসারে টিকে আছে কোনোমতে,
তোমার বাবা পালিয়েছে বহু আগে কারাগার থেকে,
চতুর্দশি তুমি একেএকে
সংসার সন্তান ধর্ম রাষ্ট্র না দেখেই, মানসচক্ষে
দেখেছো পাশের বাড়ির শিঁকেয়
ঝুলে থাকা গোপন সম্বল থেকেই
জন্ম হয় জগত সংসার
আর
ভেবেছো, এক মুঠ চাল পেলে
রান্না হবে পুকুরের জলে
তারপর স্বপ্নে হবে খাওয়া
হাওয়া আর হাওয়া
কোনো ভাঁড়
বা চাটুকার
মন্ত্রী তোমাকে রক্ষা করবে না,
সরাতে পারবে না তোমার যন্ত্রণা।

তুমি পছন্দ করতে পাড়া বেড়াতে,
ফুল কুড়াতে, নোলকে নাকে রেখে ফুল পরতে,
আদুরে বিড়াল ছানাকে খেলায় মাতাতে আনমনে;
তবুও এই জ্বরজীর্ণ বাঙলার এক কোণে
তুমি ঠাঁই না পেয়ে,
এক কৌটা বিষ হাতে ঢুকে পরলে লাফায়ে
অন্ধকার গহ্বরে, তোমার অভিমানী হাসিকে দিলে জলাঞ্জলি,
এক য কালো মৃত্যু ভীত পল্লির
ক্ষুদ্রতম গৃহে, তোমার জীবনে এক টুকরো
পরহিতব্রত ছিলো কী না কারো
কাছে এ-প্রশ্ন জাগেনি,
তদুপরি তুমি নিরাশ হতে চাওনি,
তবু কেন শেষ মুহূর্তের কামনায় চলে গেলে মৃত্যুর আঙিনায়,
তুমি আর কখনো আমাদের জানালায়
উঁকি দিবে না, কেননা তুমি সহজেই
ছুঁড়ে ফেলেছো বিষাক্ত পল্লীকে শুরুতেই
আর আমরা আজো আছি বিষের মাঝখানে
হাতে বিষের পেয়ালা,
ভীতু আত্মভোলা।

১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৪; কুষ্টিয়া

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Featured Post

বাংলাদেশের পাখির তালিকা, A checklist of the birds of Bangladesh.

Oriental Magpie Robin; National Bird of Bangladesh বাংলাদেশের বন্যপ্রাণীর তালিকাটি অনেক সমৃদ্ধ। এদেশ পাখির দিক দিয়...