শনিবার, মার্চ ০৯, ২০১৩

সৌরভ মাহমুদ বাংলাদেশের একজন পরিচিত লেখক ও আলোকচিত্রী



সৌরভ মাহমুদ (ইংরেজিতে: Sourav Mahmud) হচ্ছেন বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় ও পরিচিত আলোকচিত্রী এবং লেখক। তিনি বাংলাদেশের প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে লিখছেন।

তিনি ২৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বরিশালের শায়েস্তাবাদের পূর্ব হবিনগর গ্রামের মায়ের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতার নাম ফিরোজা আক্তার বেবী এবং বাবার নাম মো: মোতালিব হোসেন। হবিনগর গ্রাম, বরিশাল ও ঢাকা শহরে বেড়ে ওঠা।

সৌরভ মাহমুদ এক যুগেরও বেশি সময় প্রকৃতি ও পরিবেশ বিষয়ে কলাম লিখছেন দৈনিক প্রথম আলোয় প্রকৃতি কলামে। উদ্ভিদবিদ্যা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে এম.এস.সি করেছেন। জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন সিইজিআইএস এ।

বর্তমানে জার্মানীর ড্রেসডেন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জীববৈচিত্র্য বিষয়ে অধ্যায়নরত এবং জার্মানীর জীববৈচিত্র্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান জেনকেনবার্গ এ কাজ করছেন। তার পাখি ও উদ্ভিদ বিষয়ে বৈজ্ঞানিক প্রকাশনা প্রকাশিত হয়েছে আর্ন্তজাতিক জার্নালে। তিনি প্রকৃতি ও পরিবেষবিষয়ক লেখক, উদ্ভিদ এবং পাখি বিশেষজ্ঞ।

তার প্রকাশিত গ্রন্থ তিনটি হচ্ছে বাংলার ও জীবনানন্দের শালিকেরা (এতিহ্য, একুশের বই মেলা ২০১০) শ্যামলী রমনা (অনিন্দ্য প্রকাশ, ২০১৬) এবং পাখি আমার বনের পাখি (অনিন্দ্য প্রকাশ, ২০১৬)।

রবিবার, মার্চ ০৩, ২০১৩

স্পেন _হিউ উইস্টান অডেন


ডব্লিউ. এইচ. অডেন
স্পেন
   ___ হিউ উইস্টান অডেন

আগামিকাল নতুন করে আবিষ্কার হবে দূরাশ্রয়ী প্রেম,
ছবি তোলা হবে দাঁড়কাকদের, স্বাধীনতার মহিমান্বিত ছায়ায়
চলবে আমোদআগামিকাল দিন আসবে বহুরূপী ও সংগীতকারের

বোমার মতো ফেটে-পড়া তরুণ কবিদের জন্য আগামিকাল
হ্রদের ধারে হাঁটার অবকাশ আর সপ্তাহের পর সপ্তাহ নিটোল সংবেদন;
আগামিকাল গ্রীষ্মের অপরাহ্ণে মফস্বল জোড়া সাইকেল প্রতিযোগিতা; কিন্তু আজ লড়াই

আজ সুচিন্তিতভাবে বেড়ে যায় মৃত্যুর মাত্রা,
অমোঘ খুনের পর সজ্ঞান অপরাধবোধে মেনে নিতে হয়;
আজ শক্তিক্ষয় ম্যাড়মেড়ে স্বল্পস্থায়ী ইস্তেহার ও একঘেয়ে আলোচনার পেছনে

(অংশ)

বি.দ্র. কিছু ভীরু ও কিছু সুবিধাবাদির সাথে প্রায় সব প্রতিক্রিয়াশীলরাই বলছে বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধ লাগার সম্ভাবনার কথা। আর আমার মনে পড়ছে ১৯৩৬ সালে শুরু হওয়া স্পেনের গৃহযুদ্ধের কথা। সেই যুদ্ধে সমাজতন্ত্রীদের নেতৃত্বে লড়েছিলেন জনগণ। আর অডেন লিখেছিলেন আমার খুব পছন্দের একটি কবিতা। তার কিছু অংশের অনুবাদ উপরে দেয়া হলও।

জনগণ লড়বেই সমাজতন্ত্রের জন্য। সমাজতান্ত্রিকরা যে কোনো যুদ্ধকেই সমাজতান্ত্রিক শ্রেণিযুদ্ধে রূপান্তর করতে চেষ্টা করবেন। জনগণ তাদের সাথে থাকবেন। কিন্তু বাংলাদেশে সে প্রস্তুতি আছে কী?



Spain
By W. H. Auden

To-morrow the rediscovery of romantic love;
The photographing of ravens; all the fun under
                      Liberty's masterful shadow;
To-morrow the hour of the pageant-master and the musician.

To-morrow for the young the poets exploding like bombs,
The walks by the lake, the winter of perfect communion;
                     To-morrow the bicycle races
Through the suburbs on summer evenings; but today the struggle.

Today the inevitable increase in the chances of death;
The conscious acceptance of guilt in the fact of murder;
                      Today the expending of powers
On the flat ephemeral pamphlet and the boring meeting.

সোমবার, জানুয়ারী ২৮, ২০১৩

কালো ভাল্লুক, Asiatic/Tibetan Black Bear, Ursus thibetanus.


বাংলা নামঃ কালো ভাল্লুক,  
ইংরেজি নাম/Common Name: Asiatic/Tibetan Black Bear,
বৈজ্ঞানিক নাম/Scientific Name: Ursus thibetanus,
সমনামঃ Ursus torquatus, helarctos tibetanus.  

জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগ/রাজ্যKingdom: Animalia
বিভাগ/Phylum: Chordata
শ্রেণী/Class: Mammalia
বর্গ/Order: Caniformia,
পরিবার/Family: Ursidae,
গণ/Genus: Ursus, Linnaeus, 1758;
প্রজাতি/Species: Ursus thibetanus, (Cuvier, 1823)
বর্ণনাঃ বাংলাদেশের স্তন্যপায়ীদের মধ্যে ভাল্লুক ছিলো তিন প্রজাতির। মাঝারী লোমের কালো কুচকুচে মসৃণ দেহ। মজবুত শরীর। বুকে সাদা লোমের উপর V কিংবা অর্ধচন্দ্রাকার আকৃতির চিহ্ন স্পষ্ট দেখা যায়। কান অন্য ভাল্লুকের তুলনায় বড়। নিচের ঠোঁট সাদাটে। দেহের আকার মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত ১২০ থেকে ১৯৫ সেমি। কাঁধের উচ্চতা ৭০ থেকে ১০০ সেমি। লেজ খুব ছোট ১১ সেমি। পুরুষের ওজন ৫০ থেকে ২০০ কেজি এবং স্ত্রী ভাল্লুকের ওজন ৪০ থেকে ১২৫ কেজি।
স্বভাবঃ বন্দী অবস্থায় ৩০ বছর পর্যন্ত বাঁচার তথ্য আছে। কালো ভাল্লুক দিন রাত সমান সক্রিয়। এরা জঙ্গলাকীর্ণ পাহাড়ি বনে, সমতল বনে থাকতে পারে। কালো ভাল্লুক পাহাড়ে এবং গাছে উঠতে দক্ষ। এরা একা থাকে। কালো ভাল্লুক বিভিন্ন কীটপতঙ্গ, ফলমূল, মধু খায়কালো ভাল্লুক সাধারণত মানুষকে খাবারের উদ্দেশে আক্রমণ করে না। ভয়-পেয়ে বা নিজের বা বাচ্চার নিরাপত্তার কারণে মানুষকে আক্রমণ করে থাকে। এরা লোকালয়ে আসেনা, গভীর বনে থাকতে পছন্দ করে।
বিস্তৃতিঃ কালো ভাল্লুক বাংলাদেশের সিলেট ও চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। বৈশ্বিকভাবে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভারত, চিন সহ এশিয়ার অধিকাংশ বনাঞ্চলে পাওয়া যায়।   
অবস্থাঃ কালো ভাল্লুক বাংলাদেশে মহাবিপন্ন এবং বিশ্বে সংকটাপন্ন। ১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণি আইনে এ প্রজাতি সংরক্ষিত।
বিবিধঃ বাসস্থান ধ্বংস, চামড়া, লোম, পিত্তথলি, দাঁত, নখের জন্য শিকারের ফলে কালো ভাল্লুক বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্তির দারপ্রান্তে। দ্রুত এদের সংরক্ষণে পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশ থেকে চির বিদায় নিবে সুন্দর এই প্রাণীটি।

শুক্রবার, জানুয়ারী ২৫, ২০১৩

ছোট বেজি বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক স্তন্যপায়ি


ছোট বেজি, Photo: Rejaul Hafiz Rahi
বাংলা নামঃ ছোট বেজি, নকুল,
ইংরেজি নাম/Common Name: Small Indian Mongoose.
বৈজ্ঞানিক নাম/Scientific Name: Herpestes auropunctatus,

জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগ/রাজ্যKingdom: Animalia
বিভাগ/Phylum: Chordata
শ্রেণী/Class: Mammalia
বর্গ/Order: Carnivora
পরিবার/Family: Herpestidae,
গণ/Genus: Herpestes, Illiger, 1811;
প্রজাতি/Species: Herpestes auropunctatus, (Hodgson, 1836)
বর্ণনাঃ বাংলাদেশের স্তন্যপায়ীদের মধ্যে ছোট বেজি বা নকুল দেহ খাটো ও সরু, লেজ দীর্ঘ এবং পা খাটো। রুপালি ধূসর লোমশ শরীর ছোট বেজি বা নকুল বা নেউলের। মাথাসহ দেহের দৈর্ঘ্য ২৮ সেমি. এবং লেজ ২৩ সেমি। 
স্বভাবঃ বেজী স্বভাবে নির্দিষ্ট এলাকায় চলাচল করে নিজ এলাকায় অন্যকে প্রবেশ করতে দেয় না। এরা দিনে ও বিকেলের দিকে শিকার করে। দিবাচর হলেও এরা ছায়াময় জায়গা পছন্দ করে। বেজী দ্রুত চলাফেরা করতে পারে, গাছেও উঠতে পারে। ইঁদুর জাতীয় ছোট প্রাণী, সাপ, ব্যাঙ, পাখি, হাঁস-মুরগী, ডিম, টিকটিকি, পোকামাকড় বেজীর খাবার। এরা ঝোপঝাড়ের আড়ালে মাটির গর্তে বাস করে এবং গর্তেই বাচ্চা প্রসব করে। এরা নিরীহ শান্ত প্রাণী
বিস্তৃতিঃ  বাংলাদেশের সর্বত্রই পাওয়া যায়। তবে সুন্দরবনে নেই। তাছাড়া ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও পেনিনসুলায় বিস্তৃত। 
অবস্থাঃ ছোট বেজি বা নকুল বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক স্তন্যপায়ি।
বিবিধঃ এরা আমাদের কৃষি ও পরিবেশের জন্য খুব উপকারী। প্রতিদিন ইঁদুর ও পোকামাকড় খেয়ে বেজী আমাদের পরিবেশের ও সেই সাথে ফসলের উপকার করছে। তাছাড়া কথায় আছে যেখানে বেজী থাকে সেখানে সাপ আসে না। ফসলের চাষ, ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার ফলে বেজী হারাচ্ছে তার আশ্রয়। তা ছাড়া বন্যপ্রাণী দেখামাত্র মারার প্রবণতার ফলে গ্রামীণ বনের অতি উপকারী এই প্রাণীটিও ঝুঁকির মুখে।

দেশি খরগোশ বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক প্রাণি


দেশি খরগোশ, ফটো: Sumeet Moghe
বাংলা নামঃ দেশি খরগোশ,
ইংরেজি নাম/Common Name: Indian Hare, Black-naped Hare, Rufous-tailed Hare.
বৈজ্ঞানিক নাম/Scientific Name: Lepus nigricollis,

জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগ/রাজ্যKingdom: Animalia
বিভাগ/Phylum: Chordata
শ্রেণী/Class: Mammalia
বর্গ/Order: Lagomorpha
পরিবার/Family: laporidae,
গণ/Genus: Lepus, Linnaeus, 1758;
প্রজাতি/Species: Lepus nigricollis (Cuvier, 1823)
বর্ণনাঃ বাংলাদেশের স্তন্যপায়ীদের মধ্যে দেশি খরগোশ নিরীহ শান্ত প্রাণী 
স্বভাবঃ বাংলাদেশের কিছু গ্রামীণ বন চা বাগান এলাকায় ও বনে খরগোশ আছে। তবে সুন্দরবনে নেই। বাদামী ধূসর গায়ের রঙ। ঘাড়ে কালো দাগআছে। কান লম্বা। সামনের পায়ের চেয়ে পিছনের পা লম্বা। পা নখ যুক্ত। লেজ ছোট। এরা ঘাস, পাতা, ফুল ফল, শেকড়বাকড় খায়। খরগোশ পানি ওঠে না এমন ঘাসবন বা ঝোপঝাড়ের নিচে মাটিতে গর্ত করে বাসা বাঁধে। বিপদের আশঙ্কা থাকলে এরা বাচ্চাকে মুখে করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। স্বভাবে এরা নিশাচর।
বিস্তৃতিঃ দেশি খরগোশ বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক প্রাণিবাংলাদেশের সর্বত্রই এক সময় ছিলো। তাছাড়া ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কায় এ প্রজাতি পাওয়া যায়। 
অবস্থাঃ দেশি খরগোশ বাংলাদেশে মহাবিপন্ন ও বিশ্বে কম শঙ্কাগ্রস্ত বলে বিবেচিত। ১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণি আইনে এ প্রজাতি সংরক্ষিত।
বিবিধঃ শান্ত-নিরিহ এই দেশি খরগোশের বাসস্থান ধ্বংস করে আমরা তাদের করেছি আশ্রয়হীন। অনেকেই হয়ত দেখে থাকবেন হাট-বাজারে দেশি খরগোশ বিক্রি হচ্ছে। নির্বিচারে শিকার ও আবাস ধ্বংসের ফলে, খরগোশ বাংলাদেশে শেষ হবার পথে। আমাদের গ্রামীণ বন গুলোর বন্যপ্রাণী এভাবেই দিন দিন বিলুপ্তের দারপ্রান্তে। এদের রক্ষায় আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে। নয়ত আমাদের গ্রামীণ বন হারাবে তার চিরচেনা মুখ।


আরো পড়ুন:

Featured Post

বাংলাদেশের পাখির তালিকা, A checklist of the birds of Bangladesh.

Oriental Magpie Robin; National Bird of Bangladesh বাংলাদেশের বন্যপ্রাণীর তালিকাটি অনেক সমৃদ্ধ। এদেশ পাখির দিক দিয়...