রবিবার, অক্টোবর ১৩, ২০১৩

সূর্য তোমাকে অভিবাদন



একটি রাষ্ট্র এলো হামাগুড়ি দিয়ে
আমাদের চারপাশের অন্ধকার হাতড়িয়ে
আমরা কজন তরুণ তখনো জানি না
কী তার উদ্দেশ্য, আছে কী তার রক্তচক্ষু সান্ত্রী পুলিশ সেনা?

দুদিন যেতে না যেতেই ভয়ে আমরা হয়ে গেলাম কাঠ
প্রহরি এসে জানালো আমাদের জন্য এই দেশে বন্ধ কপাট
দুমাস যেতে না যেতেই এসে গেলো আমাদেরকে অরক্ষিত রেখে রক্ষি মাস্তানি,
স্টপ ফায়ারিং নির্দেশেও তারা আমাদের কথা শোনেনি
দু মাসের মধ্যেই এসে গেলো রঙবেরঙের গোয়েন্দা সংস্থা
বাড়লো নজরদারি, গুপ্ত হত্যা, পদে পদে হেনস্থা,
মেরে ফেললো বেঁচে উঠলাম হাঁটলাম চার পায়ে,
অকস্মাদুএকজন ঘুরে দাঁড়ালো নির্ভয়ে
আমাদের মায়েরা বারো মাস ঘন ঘন
জন্ম দিতো বলেই আজো অগণন
মানুষ করে কলে কাজ, মাঠে চাষ বাস
উইপোকার মতো তারা অজস্র বলেই নেতাদের ওঠেনি নাভিশ্বাস,
ভায়েরা বোনেরা আজও যায় মিছিলে,
নেতানেত্রী হাত নাড়ালে তারা শ্লোগান তোলে,
উত্তেজনায় মাঝেমধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
রাস্তায় পাথর ইট বোমা আগুন পাওয়া
ভাবখানা তেত্রিশ বছর ধরে জাতি উদ্ধারের
আমাদের সাথে দেখা হয় নেতা ও মাস্তানের।
  
কোথায় হারালো আশা বন্ধু কোনখানে
কে এখন খোঁজে কোন কবিতার মানে?

জনগণ অজস্র পালে পালে;_
ঘুষ, খাওয়া, টাকা নিয়ে ঝগড়া চালালে
কার মাথা ঠিক থাকে; বন্ধুর মত ও শপথ
ভুলে অর্থের রাজপথে মাঝে মাঝে লড়াকুরাই ভুলে যায় পথ;
আর যারা ছিলো পথের দিশারি
তারা পচে যায়, বাঁচতে না পারলে মাইরি
শুধু চোখে পড়ে হাত নাড়ানাড়ি অন্ধকারে
ধীরে ধীরে অন্ধকার রাষ্ট্রের পথেও বাড়ে
তাদের ধোঁকাবাজি,
পাজি;
আছে বক্তৃতা সুনির্দিষ্ট
টাকা আর ক্ষমতার পথে সব কুতুব উচ্ছিষ্ট

তবুও আঁধারেই স্বাধীনতা বুকে টান
দিয়ে জানায় পরাধীনতা মানে বিদেশি ট্যাঙ্ক যুদ্ধবিমান,
যায় না কোথাও পাওয়া পোড়াদেশে একমুঠো বন্ধুত্ব
খবরে প্রতিদিন আহত নিহত হতাহত
নেই নিজস্ব সময় ঘুম, অস্থির হৃদয়
কারো কারো ভালোবাসা মানে না বাধা বা জয় পরাজয়
তিনবাহিনীর যৌথ প্রযোজনায় অভিনীত হয় সিনেমা
ফলাফলে ইজ্জত হারায় পৃথিবীর কোনো কোণে আমাদেরই মা;
স্বভুমে পরবাসি উদ্বাস্তু গৃহহীন তারা
নির্যাতনে বন্দিত্বে বিশ্ব সাম্রাজ্যের কবলে প্রাণহারা
এ সব আতঙ্কিত মানুষ বিপন্ন ভোরে
যুদ্ধাস্ত্র হাতে সূর্যকে জানায় অভিবাদন বুকের পাঁজরে
অপশাসন বাড়লেও ঘরে সাজায় একঝাঁক জীবনফোয়ারা
রাজপথে মৃত্যুদণ্ড কাঁধে নিয়ে দাঁড়ায়, চোখে স্বপ্ন ভরা
পৃথিবীকে ভালবেসে দেয় উপহার
পরাধীনতামুক্ত আকাশ সবুজ পাহাড়
দেখে দৈনন্দিন প্রয়োজনের ফাঁকে
নদী, মাঠ, সমুদ্রের শেষ প্রান্তে থাকে
উজ্জ্বল স্মৃতিদেশ নৈর্বক্তিক চেতনার কাল,
সৃষ্টির ভোর, যুদ্ধ, আমূল সকাল।

২৮-০৮-০৪, কাস্টম মোড়, কুষ্টিয়া

শনিবার, অক্টোবর ১২, ২০১৩

ঐতিহাসিক ক্ষমতাধর টয়লেট টিস্যু



এই যে মানুষ, এই দেখুন আমার হাতে ঝকঝকে টয়লেট টিস্যু
রূপসীর ন্যায় আপনাকে ভোলাতে পারে
আপনার চিত্ত ব্যাকুল হতে পারে তার নগ্নতায়
যেন আপনার সামনে উড়ছে দুটি নৃত্যরত প্রজাপতি
চলনবিলের বর্ষার উচ্ছ্বলিত স্রোতে,

এই যে আপনারা দেখুন, আমার দু’আঙুলের মাঝখানে
ফিনফিনে শাড়ির মতো উড়ছে টয়লেট টিস্যু,
ফেলে দিন আপনার বর্জের সাথে বুড়িগঙ্গার জলে,
চলে যাক বঙ্গসাগরে, এজন্য অবশ্য আপনার সাহসী হওয়া চাই।

টিস্যুর জন্মক্ষণের জন্য দুঃখ বা পরিতাপ করে কোনো ফায়দা নেই,
তার রূপের জেল্লা আছে,  
তাকে বিলীন করে দিন বর্জের সাথে;
আর হে মানুষ, আপনি দেখুন আপনি কী চান?

কী হে, জেনেছেন অচেতন দুই হৃদয়ের আলিঙ্গনে
যে সুর বাজে তার দশ মাস পরে মানবপোনাই জন্ম নেয়
আমার হাতে উড়ছে আপনার সন্তানের পতাকা,
এই সেই টয়লেট টিস্যু, ক্ষণস্থায়ি রুমাল, একে ছুঁড়ে ফেলুন।

আমি যখন একা থাকি বা গোসল করি ঝরনায়,
একটি গান গাই অথবা নিজে কবিতা লিখি,
সেই কবিতা লেখা কাগজখানা এখন উড়ছে আমার হাতে;  
এই হাত না থাকুক তবুও পুঁজিবাদের কালে উড়বেই এই টয়লেট চিস্যু,
কবিতা আর টয়লেট টিস্যুর দূরত্ব আজ সামান্য,
এই ঘোষণার চেয়ে বড় সত্য বস্তুবাদে বড় বেমানান

আর হে মানুষ, বুঝেছেন কি, স্বাধীনতা আর সৃষ্টিশীলতার অর্থ
বুঝেছেন কি পানি আর জলের পার্থক্য
জলপাই আর জলহস্থির পার্থক্য
বুঝেছেন কি আকাল আর সকাল
কড়াইয়ের তেলে ভাজা আর উনুনে পোড়ার পার্থক্য
বুঝোছেন কি আপনার হাড় আর ঠুঁটো জগন্নাথের সম্পর্ক,
খুজেঁছেন কীভাবে সৌন্দর্য আসে শিল্পে,
নাকি আপনারা যেখানে আছেন সেখানেই থাকবেন আমৃত্যু?  

হে মানুষ, শুনেছেন কি বাঁচার গান,
জানেন কি ধুরন্ধরেরা নাচতে জানে কাপড় খুলে ইদুঁরের মতো
জানেন কি ঘানি টেনে কোনোদিন রাত শেষ হয় না,
বুছেছেন কি বাটি চালিয়ে নিজের খুঁটি তৈরি হয় না,
হাওয়া খায় হাওয়া ভবনের হাওয়া বিবিরা
আর আপনারা পান কাঙালি ভোজ, হায়রে কাঙাল
ঘোষক দল চেতনা দলের ভুষি মাল,
ঘুষি খেলে বাঁচে না।

আপনারাই পরিষ্কার রাখেন দু’দলকেই,
পরাজিত হবেন না আপনারা কখনো, যদিও মরতে পারেন টর্চার সেলে,
দেখবেন বারবার বছরে বছরে কারা যায় কারা আসে ক্ষমতাকেন্দ্রে;
ইতিহাসের রচনাবলিতে আপনারা থাকবেন না,

হে মানুষ, মুছে ফেলুন শোষণের জন্মদাগ, মাটির ঢেলা নেন দুই হাতে,
একে ৪৭ও নিতে পারেন,
এ থেকেই জন্ম হবে রুটি-সভ্যতার।

এই যে মানুষ, আপনারা, যারা আমার সামনে,
যারা দিয়াশলাই, সিগ্রেট বাক্স, লাইটার চেনেন
যারা পাথর চেনেন, পাহাড়ের গায়ে লিখতে পারেন
তারাই লিখুন আপনাদের নিজের ইতিহাস।

২৪.০৭.০৪. জাফরাবাদ, শংকর, ঢাকা

Featured Post

বাংলাদেশের পাখির তালিকা, A checklist of the birds of Bangladesh.

Oriental Magpie Robin; National Bird of Bangladesh বাংলাদেশের বন্যপ্রাণীর তালিকাটি অনেক সমৃদ্ধ। এদেশ পাখির দিক দিয়...