সমনাম: Loxia philippina, Linnaeus, 1766
বাংলা নাম: দেশি বাবুই,
ইংরেজি নাম/Common Name: Baya
Weaver.
জীববৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ/রাজ্য: Animalia
বিভাগ: Chordata
শ্রেণী: Aves
পরিবার/Family: Passeridae
গণ/Genus: Ploceus, Cuvier, 1816;
প্রজাতি/Species Name: Ploceus
philippinus (Linnaeus,
1766)
ভূমিকা: বাংলাদেশের
পাখির তালিকায় Ploceus এই গণে পৃথিবীতে ৬২ প্রাজাতির পাখি
রয়েছে। বাংলাদেশে রয়েছে তার তিনটি প্রাজাতি। সেগুলো
হলো আমাদের আলোচ্য দেশি বাবুই, অন্য দুটি বাংলা বাবুই ও দাগি বাবুই।
বর্ণনা: দেশি
বাবুই মোটা বাদামি ঠোঁট ও বাদামি দেহের ছোট বুননবিদ পাখি। এর দৈর্ঘ্য
১৫ সেমি, ওজন ২৮
গ্রাম, ডানা
৭.৪ সেমি, ঠোঁট
১.৮ সেমি, লেজ
৪.৮ সেমি। প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেপাখির চেহারা মেয়ের
চেয়ে ভিন্ন।
দেশি বাবুইয়ের বাসা, Nests of Baya Weaver are hanging. |
বিস্তৃতি: দেশি
বাবুই বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি। সব বিভাগের
গ্রামাঞ্চলে পাওয়া যায়। পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, থাইল্যাণ্ড,মিয়ান মার, ভিয়েত নাম,
ইন্দোনেশিয়াসহ ও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে।
দেশি বাবুই
কমার কারণ: দেশে তাল গাছের পরিমাণ অনেক কমেছে। সেইসাথে
কমেছে কাশবন। সঙ্গত কারণেই
বাবুই পাখি তাল গাছ ছেড়ে ভিন্ন গাছে বাসা বাঁধছে। আমি ২০১১ সালে
দিনাজপুর জেলায় শিমুল গাছেও বাসা বাঁধতে দেখেছি। এছাড়া
খেজুর ও নারকেল গাছেও এখন বাসা বাঁধছে। গাছ কমার
কারণেই গ্রাম বাংলার পল্লী এলাকায় এখন আর আগের মতো বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা চোখে
পড়ে না। আগে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ দেখা যেত
বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা। কিন্ত সময়ের
বিবর্তনে ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে আজ এ পাখিটি আমরা হারাতে বসেছি। সেই
সাথে হারিয়ে যাচ্ছে শিল্পী,
স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনের কারিগর বাবুই পাখি ও তার বাসা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক শ্রেনীর মানুষ অর্থের লোভে বাবুই পাখির বাসা সংগ্রহ করে
শহরে ধনীদের নিকট বিক্রি করছে। এই বাবুই পাখির বাসাগুলো শোভা পাচ্ছে ধনীদের ড্রইং রুমে।
অবস্থা: দেশি
বাবুইকে ২০০৯ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষে
বাংলাদেশে বিশ্বে ও বাংলাদেশে বিপদমুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাহিত্যে
ব্যবহার: বাবুই
পাখির অপূর্ব শিল্প শৈলীতে বিষ্মিত হয়ে কবি রজনীকান্ত সেন তার কবিতায় লিখেছিলেন ‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই। আমি
থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে।’ এক সময় নীলফামারী জেলার প্রায় সবখানেই দেখা যেত শত শত বাবুই
পাখির বাসা।
আরো পড়ুন: