বাংলাদেশের নদী নিয়ে আমি প্রায় এক যুগ ধরে
কাজ করছি। আমার সম্পাদনায় ২০১০ সালে প্রকাশিত বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা গ্রন্থটি দেশের মৃত আধা মৃত নদীদের
উৎসর্গ করি। এই উৎসর্গটি দেখে পানি বিশেষজ্ঞ জনাব ম ইনামূল হক বলেছিলেন
সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসর্গপত্র।
আমরা ১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস
পালন করি। আপনারা অনেকেই নদীর ব্যাপারে কাজ করেছেন। কিন্তু আমরা হয়ত ভুলে গেছি
নদীতেই থাকে এমন এক প্রাণী যার নাম কচ্ছপ। খুবই নিরীহ গোছের এই প্রাণীগুলো এখন
বাংলাদেশে মহাবিপন্ন। বাংলাদেশে যে মোট ২৯ প্রজাতির কচ্ছপ পাওয়া যায় সেগুলোর ভেতর
পাঁচটি প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কোনো প্রজাতিই সুখে নেই। বিলুপ্তির প্রহর গুণতে থাকা সুন্দর
নিরীহ এই প্রাণীগুলোকে আমরা কী বাঁচাতে পারি না।
অন্য
প্রসঙ্গে বলি, আমি বাংলা উইকিপিডিয়ার নদীর তালিকার প্রায় সবগুলো নিবন্ধেই সম্পাদনা করেছি,
প্রায় সবগুলো নিবন্ধ তৈরি করেছি। আপনারা নদীগুলোকে অনেক ভালোবাসেন, সেগুলোকে নিয়ে ভাবেন। আপনারা অনুগ্রহ করে আমাকে নদীগুলো
সম্পর্কে জানাবেন। নদীগুলোর যেসবের চিত্র নেই, সেগুলো উইকিপিডিয়ায় যুক্ত
করবেন। কীভাবে যুক্ত করতে হবে তা বোঝার চেষ্টা করবেন। নদী বাঁচলেই প্রাণ ও প্রকৃতি
বাঁচবে, বাঁচবে মানুষ। কিন্তু সহজে নদী বাঁচবে না, তীব্র রাজনৈতিক লড়াইয়ের প্রয়োজন পড়বে। এবং আমার আস্থা আছে, নদী বাঁচাতে জনগণ লড়বেই।
বাংলাদেশের নদী সম্পর্কে বলতে গেলেই আসে ফারাক্কা বাঁধের কথা। এটা সম্পর্কে একটাই মন্তব্য, ফারাক্কা বাঁধ গুড়িয়ে দিন। ভারতে বাঁধটির বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে অনেক মানুষ। পরিবেশবাদীদের সাথে যোগ দিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারসহ আরো অনেক সুপরিচিত মুখ।
প্রতিবাদকারীর
আরেকজন হচ্ছেন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার বিজয়ী রাজেন্দ্র সিং। তাকে ভারতের ‘ওয়াটারম্যান’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে।
তিনি ‘ফারাক্কা বাঁধ গুঁড়িয়ে
দেওয়া’র প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি
বলেন, ফরাক্কা হলো বিহারের কাছে অশুভ। এটা একটা
অভিশাপ- যাকে সরানোর প্রয়োজন। কারণ, যতক্ষণ তা না হচ্ছে, ততক্ষণ এগিয়ে যাওয়া অসম্ভব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন