জীবনী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
জীবনী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বুধবার, ডিসেম্বর ২৮, ২০২২

একজন গোবিন্দ গৌতম এবং নেপাল ভারত সীমান্ত

 


গোবিন্দ গৌতমকে সশস্ত্র সীমা বল, যা আসলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী, কাঞ্চনপুর জেলার আনন্দবাজারে হত্যা করেছে ৯ মার্চ ২০১৭ তারিখে। তিন দিন পর আজ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দুধা নদীর তীরে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষ হয়েছে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দিন হোলি হওয়া সত্ত্বেও হাজারো মানুষ তাঁর শবযাত্রায় যোগ দেয়।

তাঁর মারা যাবার দিন থেকে তিন দিনে হাজারো মিছিল চলেছে পুরো নেপালে। কাঠমান্ডুসহ নেপালের সর্বত্র হাজারো মানুষ শ্লোগান দিয়েছে গোবিন্দ গৌতম অমর হও, ঘাতকদের ফাঁসি চাই। আজ ভিড় ছিলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে। নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হত্যার নিন্দা জানিয়েছে এবং গুরুতর উদ্বেগের সঙ্গে এই ব্যাপারে ভারত সরকারের উচ্চ কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দোষীদের বিচারের সম্মুখীন করার জন্য ভারতকে উদ্যোগ নিতে বলেছে। এই পরিস্থিতিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডের কাছে টেলিফোনে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।

রাজপথে জনতাকে শান্ত করতে গত পরশু নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিমলেন্দু নিধি গৌতমকে শহীদ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। পার্লামেন্টে দেয়া বিবৃতিতে তিনি গৌতমের পরিবারকে ইতিমধ্যে ১০ লাখ নেপালি রূপি ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দেন এবং তার সন্তানদের শিক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্র নিয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

অন্যদিকে, সিপিএন-ইউএমএল-এর জ্যেষ্ঠ নেতা বামদেব গৌতম মঙ্গলবার বলেছেন যে নেপাল সরকারের উচিত গোবিন্দ গৌতম হত্যার জন্য নেপালের কাছে ভারতকে দুঃখ প্রকাশ করা। একই সময়ে, গৌতম বলেছিলেন যে ভারতের উচিত শোকাহত পরিবারকে ১০ মিলিয়ন টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

সুদূর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আঞ্চলিক পুলিশ অফিসের প্রধান ডিআইজি রোমেন্দ্র সিং দেউজার মতে, গৌতমের দেহ থেকে গুলিটি উদ্ধার করা হয়েছে এবং কাঠমান্ডুর পুলিশ সদর দফতরের অধীন কেন্দ্রীয় পুলিশ ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে কোন বন্দুক থেকে গুলি করা হয়েছিল তা নির্ধারণ করতে।

ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ প্রতিরোধে গৌতম গোবিন্দের আত্মবলিদানকে শির নিচু করে গোটা জাতি সম্মান জানিয়েছে। তাঁকে মহান শহীদ হিসেবে উল্লেখ করে সাংবাদিক কৃষ্ণ মহরা লিখেছেন, মাতৃভূমি নেপালের মাটি, সীমানা এবং জায়গা রক্ষায় চির অম্লান হয়ে থাকবে এই শহীদের আত্মবলিদান।

ঘটনার ছয় দিন পরও সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি এবং আন্তঃসীমান্ত পরিবহন ও ব্যবসা-বাণিজ্য এখনও সম্ভব হচ্ছিল না।

বাংলাদেশের জনগণ কি কিছু শিখবেন এই ঘটনায়?

রবিবার, ডিসেম্বর ২৫, ২০২২

সতীশ পাকড়াশী ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা

বিপ্লবী সতীশচন্দ্র পাকড়াশী (১৩ ডিসেম্বর ১৮৯১  ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৭৩) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম নেতা এবং বাঙালি সশস্ত্র বিপ্লববাদী মুক্তিযোদ্ধা।

ছাত্র থাকাকালীন মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি প্রখ্যাত বিপ্লবী ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী মহারাজের সংস্পর্শে আসেন। তার ফলশ্রুতিতে ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় তিনি তৎকালীন গোপন বিপ্লবী দল অনুশীলন সমিতির সদস্য হন। তাঁদের চেষ্টায় পার্শ্ববর্তী সাটিরপাড়া গ্রামে অনুশীলন সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়, যেখানে তারা লাঠি, ছুরি এবং ড্রিল নিয়ে শারীরিক ব্যায়ামের জন্য নিয়মিত জড়ো হতে থাকেন। প্রমথনাথ মিত্র যুবকদের বলেছিলেন যে বিদেশী পণ্যের বিরুদ্ধে পিকেটিং দিয়ে স্বাধীনতা পাওয়া যাবে না, যা শুধুমাত্র সহিংস বিদ্রোহ দ্বারা স্বাধীনতা অর্জন করা যেতে পারে; তাই দলে দলে নিজেকে সংগঠিত করতে হবে। তাই তারা সশস্ত্র সংগ্রামের পথ ধরেন। 

সতীশ পাকড়াশী ম্যাট্রিক পরীক্ষায় পাশ করেন ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে। ঐ বছরই অস্ত্র আইনে সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করা আরম্ভ করেন। মুক্তি পেয়ে নরসিংদীতে ফিরে এসে আবার গোপন দলের কাজে যোগ দেন। তাকে মালদহে পাঠানো হয়। ১৯১৪ সালে তিনি কলকাতা যান। তৎকালীন আধুনিক বর্বর ব্রিটিশ সরকার একাধিক রাজনৈতিক ডাকাতির অপরাধে তার নামে ওয়ারেন্ট জারি করেছিল।

১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় পুলিশের দমননীতির জন্যে সহকর্মী নলিনীকান্ত বাগচীর সাথে আত্মগোপনে চলে যান। সমিতির আরো কয়েকজন সদস্যসহ তারা আসামের গৌহাটিতে গিয়ে সেখান থেকে সারা বাংলাদেশের সশস্ত্র বিপ্লবের কাজ পরিচালনা করতে থাকেন। পুলিশ ১২ জানুয়ারি ১৯১৮ তারিখে তাদের গোপন আস্তানা ঘিরে ফেললে তারা ৭ জন নিকটের নবগ্রহ পাহাড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন এবং পুলিশবাহিনীর সাথে রিভলভার নিয়ে যুদ্ধ করতে থাকেন। ৫ জন ধরা পড়লেও তিনি ও নলিনীকান্ত বাগচি পালাতে সক্ষম হন। দুজনেই পদব্রজে কলকাতায় চলে যান। নলিনীকান্ত বাগচি এই ঘটনার কিছুকাল পরেই ঢাকা শহরে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন।

সতীশ পাকড়াশী ১৯১৮ সালে কলকাতায় ধরা পড়লে প্রথমে তাঁকে প্রেসিডেন্সি জেল ও পরে রাজশাহী জেলে বন্দি করে রাখা হয়। তিন বছর পরে তিনি মুক্তি পান। ১৯২৩ সালে সোভিয়েত রাশিয়া থেকে আগত অবনী মুখোপাধ্যায়ের সাথে তাকে রাশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করে সমিতি, তবে তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ১৯২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি আবার গ্রেফতার হন এবং রাজবন্দী হিসেবে ৫ বছর জেল খাটেন। এই সময় তিনি আলিপুর, মেদিনীপুর, ঢাকা, মহারাষ্ট্রের যারবেদা এবং কর্ণাটকের বেলগাঁও জেলে বন্দি থাকেন। ১৯২৯ সালে মেছুয়াবাজার বোমা মামলায় পুনরায় গ্রেপ্তার হন। তাকে আন্দামান সেলুলার জেলে দ্বীপান্তর করা হয়। ১৯৩৩ থেকে পরবর্তী ছয় বছর সেলুলার জেলে বন্দি থাকেন। এই সময় তিনি সাম্যবাদে আকৃষ্ট হন। তার জীবনের ৩২ বছর কারান্তরালে কেটেছে। ১১ বছর আত্মগোপন করে ছিলেন।

সেলুলার জেলে কমিউনিস্ট কনসলিডেশনের সদস্য ছিলেন। জেলখানায় সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদ নিয়ে পড়াশোনা করতেন। কারামুক্তির পর ১৯৩৮ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। পার্টি নিষিদ্ধ হলে আত্মগোপন করেন। বক্সা দুর্গে বন্দী ছিলেন অন্যান্য সাম্যবাদী বিপ্লবীদের সাথে। ১৯৬৪ সালে পার্টি ভাগ হলে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)তে যোগ দেন। পরে পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। বিপ্লবী সতীশচন্দ্র পাকড়াশী ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৭৩ তারিখে মারা যান।

ব্যক্তিগত একটি স্মৃতি

২০০৬-০৭ সাল হবেনরসিংদী গেছি। নরসিংদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা একদিন বিকেলে আমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হলেন। এদিক-সেদিক এই রাস্তা সেই রাস্তা ঘুরিয়ে কোনো এক গ্রামের একটি বিশাল বটগাছের পাশে গাড়ি দাড় করালেন। গাছের থেকে একটু দূরে ঝোপঝাড়ের মাঝখানে এক পুরনো মন্দির। তিনি এরকম এক জায়গায় দাড়িয়ে বললেনএই অঞ্চলে ৪০-৫০ বছর আগেও ঘন জংগল ছিলোএসব জায়গায় লুকিয়ে থাকতেন সে সময়ের ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবীরা। সতীশচন্দ্র পাকড়াশী নামে এক বিপ্লবী পাশেই জন্মেছিলেন। তিনি এসব জায়গায় লুকিয়ে থেকেই কাজ করতেন।

সেই থেকে চিনি তাঁকে। শ্রদ্ধা নিবেদন করছি ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী সতীশচন্দ্র পাকড়াশীর প্রতি। আজ বাংলাদেশে অজস্র তুচ্ছ আর ইতরেরা মহামহিম সেজেছে মুখোশের আড়ালেঅথচ এই বিপ্লবীদের কে মনে রেখেছে?

নিকোলাই অস্ত্রভস্কি ছিলেন সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক বাস্তববাদী লেখক

 


নিকোলাই আলেক্সিভিচ অস্ত্রভস্কি (রাশিয়ান: Никола́й Алексе́евич Остро́вский; ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯০৪ - ২২ ডিসেম্বর ১৯৩৬) ছিলেন ইউক্রেনীয় বংশোদ্ভূত সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক বাস্তববাদী লেখক। তিনি তার উপন্যাস ইস্পাত-এর (ইংরেজি:How the Steel Was Tempered)  জন্য সর্বাধিক পরিচিত।

নিকোলাই অস্ত্রভস্কি মনে করতেন, জীবন এক অনন্য সৃষ্টি, একে কোনোভাবেই হেলাফেলায় নষ্ট করা উচিত নয়। সংগ্রামময় এই জীবনের ধাপে ধাপে বিভিন্ন পদ্ধতিতে আমরা সচেতন প্রয়াস করে থাকি নিজেদের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য। দায়িত্বে, সামাজিকতায়, কর্তব্যবোধ সম্পন্ন একজন ব্যক্তি কখনোই পিছপা হন না। যতই প্রতিবন্ধকতা আসুক তিনি দৃঢ় মনোবল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, মুখোমুখি হন, জয় করেন বা পরাজয় থেকে শিক্ষা নেন আবার ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য।

সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ায় যিনি সাহিত্য ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সম্মান অর্ডার অব লেনিন’-এ পুরস্কৃত হয়েছিলেন। মাত্র ৩২ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনের প্রতিটি অধ্যায় ছিল সংগ্রামমুখর। শ্রমিক পরিবারে জন্ম, বেড়ে ওঠা। সোভিয়েত বলশেভিক আদর্শকে জীবন দর্শন হিসেবে গ্রহণ করেন।

নিকোলাই অস্ত্রভস্কি মাত্র ১৩ বছর বয়সেই পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। বহুবার যুদ্ধে অংশ নেন। আহত হন। তাতেও দমে যাননি। কিন্তু মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে শেষে চোখ হারান দৈহিক শক্তি হারান। কিন্তু এই প্রতিবন্ধকতাময় জীবন যে তাকে পঙ্গু করে দেয় তা নয়। মহান লেনিনের আদর্শ থেকে তিনি শিখেছিলেন জীবন কত গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই আবার ঘুরে দাঁড়ানোর পালা।

ঘুরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা থেকে শুরু করলেন নিজের লেখনী। জয় করলেন দুনিয়াকে, তার প্রথম উপন্যাস ইস্পাত দিয়ে। পাভেল নামের এক চরিত্র কিভাবে ছোট থেকেই সংগ্রাম করতে করতে বড় হচ্ছেন, বিভিন্ন জায়গায় ছুটে বেড়াচ্ছেন, শত্রুপক্ষ কে ঘায়েল করার চেষ্টা করছেন, আবার এই সবের মধ্যে তিনি শারীরিক ভাবে প্রায় অকেজো হয়ে পড়ছেন, তবু ভাবছেন কিভাবে এই সমস্ত কিছুকে তুচ্ছ করে জীবনের আনন্দ পাওয়া যায় সামাজিক দায়িত্ব পালনে ব্রতী হওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে নিকোলাই তার নিজের জীবনকেই এই উপন্যাসের পাভেল চরিত্রের মধ্য দিয়ে দেখাতে চেয়েছেন। জীবনের  শেষ পর্যায়ে সোভিয়েতের বড় বড় হাসপাতালে তার চিকিৎসা হলেও তাকে বাচাঁনো যায়নি। দুরারোগ্য ব্যাধি তার প্রাণ কেড়ে নেয়।

১৯৩৬ সালের ২২ সে ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু মৃত্যু হয়নি তার আদর্শের, তার সৃষ্টির। তিনি বলেছিলেন জীবন মানুষের সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ। আর জীবন মানুষ পায় মাত্র একটিবার। তাই এমনভাবে বাঁচতে হবে যাতে মৃত্যুর পূর্বমুহূর্তে মানুষ বলতে পারে আমি আমার সমগ্র জীবন ব্যায় করেছি মানুষের মুক্তি সংগ্রামে, মানুষকে ভালোবেসে।

জীবন এবং মৃত্যু সম্পর্কে নিকোলাই অস্ত্রভস্কির এই গভীর ধারণা তাই এখনও অসংখ্য সংগ্রামী মানুষের চলবার শক্তি এগিয়ে যাবার প্রেরণা। বিশ্বের দেশে দেশে পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বা ফ্যাসিবাদ বিরোধী প্রতিটি সংগ্রামে নিকোলাই এর জীবনবোধ আমাদের এগিয়ে দেবে প্রতিটি লড়াইয়ে। তিনি বাঙ্ময় হয়ে থাকবেন আমাদের হৃদয়ে, আমাদের দৃপ্ত পথচলায়।


শুক্রবার, এপ্রিল ১২, ২০১৩

উইন্ড্যাম ল্যুইস ও শেক্সপীয়ার


উইন্ড্যাম ল্যুইস শিল্পের জন্য শিল্পের চেয়ে মানুষের জন্য শিল্পের দিকেই বেশি ঝোঁক দেখিয়েছেন। তিনি মানতেন যে অতীত লেখকদের উদাহরণ ছাড়া শিল্প সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম অসম্ভব।  

আমাদের আলোচ্য লেখকের একটি বইয়ের নাম শিল্প ছাড়া মানুষ[১]। এই লেখক সম্পর্কে আধুনিকতাবাদী কবি সুধিন্দ্রনাথ দত্ত লিখেছেন,
“তাঁর বক্তব্যে তর্কের অবকাশ আছে বটে, কিন্তু শুভ বুদ্ধির অভাব নেই।”[২]   

মহাকবি শেক্সপীয়রকে যখন কিছু যান্ত্রিক বস্তুবাদীরা বুর্জোয়াদের সমর্থক হিসেবে উঠে পড়ে লেগেছিলেন সেইরকম মুহূর্তে ল্যুইস বলেছিলেন,
সামন্ততান্ত্রিক কবি তো দূরের কথা ত্রোইলাস ও ক্রেসিডা, টেম্পেস্ট, বা করিওলানুস নাটকে যে শেক্সপীয়ারের দেখা পাই তিনি অনেক বেশি বলশেভিক; রক্ষণশীল রোমান্স রচয়িতা তিনি নন।

তথ্যসূত্রঃ
. Men without Art, Wyndham Lewis.
. সুধীন্দ্রনাথ দত্তের প্রবন্ধসংগ্রহ; দেজ পাবলিশিং, কলকাতা, পৃষ্ঠা- ১৩৪, জানুয়ারি, ১৯৯৫।   

শুক্রবার, মার্চ ২২, ২০১৩

আফ্রিকান সাহিত্য জগতের খ্যাতিমান পুরুষ চিনুয়া আচেবে


চিনুয়া আচেবে



আফ্রিকান সাহিত্য জগতের খ্যাতিমান পুরুষ, নাইজেরিয়ার সাহিত্যিক আইকন, কয়েকটি উপন্যাসের লেখক চিনুয়া আচেবে (১৬.১১.১৯৩০-২২.০৩.২০১৩) ১৯৩০ সালে নাইজেরিয়াতে জন্মগ্রহণ করেছিলেনইজেরিয়ার ইবাদান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা সাহিত্যে শিক্ষা সমাপ্তির পর নাইজেরিয়ান বেতারে কর্মজীবন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে তার লেখালেখি শুরু হয়। ১৯৬৭ সালে তিনি নিজেই একটি প্রকাশনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন তাঁর সংগে নাইজেরিয়ার একজন বিশিষ্ট কবিও যোগ দিয়েছিলেনগৃহযুদ্ধকালে আচেবে দেশ ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত থাকেনপরবর্তীকালে ১৯৭৩ সালে নাইজেরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষার অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন১৯৯০ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে আসছিলেন চিনুয়াএরপর তিনি প্রায় ২০ বছরের বেশি সময় কোনো বই লেখেননিতার পরবর্তী বছরগুলো বেশিরভাগই কেটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করে২০১৩ সাল২২ মার্চ এক বর্ণাঢ্য প্রতিবাদি জীবন শেষে তিনি মারা গেলেন
১৯৫৮ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস থিংস ফল অ্যাপার্ট-এর সুবাদে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেন আচেবেউপন্যাসটি অনুবাদ হয়েছে ৫০টিরও বেশি ভাষায় তাছাড়া, বিশ্বজুড়ে উপন্যাসটি প্রায় কোটি কপি বিক্রি হয়তার আরেকটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস অ্যান্টহিলস অফ দি সাভানাপ্রকাশিহয় ১৯৮৮ সালে
থিংস ফল অ্যাপার্ট উপন্যাসের জন্য ২০০৭ সালে বুকার পুরস্কার লাভ করেন চিনুয়া আচেবে। চিনুয়া ২০টিরও বেশি লেখা লিখেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি লেখায় তিনি রাজনীতিবিদ এবং নাইজেরিয়ার নেতাদের নেতৃত্বেব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা প্রকাশ করেছেন।
তার বইগুলোতে দেশটির ঔপনেবেশিক সময়ে ইবো সমাজের ঐতিহ্য, দেশটির সংস্কৃতিতে খৃস্টানদের আগ্রাসন এবং আফ্রিকা ও পশ্চিমাদের মধ্যকার প্রথাগত দ্বন্দ্বের বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে উঠে এসেছে। এছাড়াও তিনি অনেক ছ্টেগল্প, শিশু সাহিত্য এবং প্রবন্ধও রচনা করেছেন।
আচেবে শুধুমাত্র সাহিত্য অথবা রাজনীতির মানুষ ন, তিনি শুধুমাত্র আফ্রিকার মানুষের কন্ঠস্বর ন। তিনি গোটা বিশ্বে পুঁজিবাদী, সাম্রাজ্যবাদী কায়েমী শক্তির বিপক্ষে যুদ্ধবন্দী, দারিদ্রপীড়িত, শোষিত মানুষের প্রাণের আত্মীয়। তিনি কলম দিয়ে বলেছেন শোষিত মানুষের মুক্তির কথা।
চিনুয়া আচেবের লেখা কারাগারের দেয়ালও ভেঙে দেয়-বলে মন্তব্য করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা বর্বরখেতাব পাওয়া আফ্রিকার ভূমিহীন দেশহীন মানুষগুলোর কথা বলার এই লেখক অজস্র নিপীড়িত মানুষের অনুপ্রেরণার উস।
লেখক হিসাবে চিনুয়া আচেবি আফ্রিকা এবং পশ্চিমের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসাবে কাজ করেছিলেন।তার কাজকে মানদণ্ড ধরেই প্রজন্মান্তরে আফ্রিকান লেখকদের কাজের মূল্যায়ন হয়ে আসছে। আচেবে বেঁচে না থাকলে ও কোটি কোটি মানুষের কাছে আজীবন প্রেরনার উস হয়ে বেঁচে থাকবে তার থিংক ফল অ্যাপার্ট’, ‘গড অব অ্যারোর মত অসংখ্য রচনা।
তাঁর একটি ইংরেজি সাক্ষাতকার পড়ুন এখান থেকে এছাড়া আপনারা চিনুয়া আচেবের একটি বাংলায় অনূদিত সাক্ষাতকার পড়ুন এই লিংক থেকেঃ আপনি যা হারিয়েছেন তা ফিরে পেতে ইংরেজি একটি শক্তিশালী অস্ত্র


বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ১৭, ২০১৩

Kiron Khan, a Photographer from Bangladesh.


Kiron Khan
Kiron Khan or Md. Shafiqul Haque Khan was born in Kushtia, Bangladesh. He placed 1st position in photo exhibition jointly organized by Dhaka Photography Institute and Dhaka Photo Club on account of World Photography Day. He placed 3rd position in photo exhibition in 2009 organized by the same organizations. He served as a Press Photographer in the Dainik Somokal from 2005 to 2007. On that time his photographs regarding extinguished birds had been published regularly in the monthly Science World magazine.
Basic Info:
Employers: Freelance Photographer
Birthday: May 30
Sex: Male
Mobile Phones: +88 01716 261777
Facebook Profile: Kiron Khan

Featured Post

বাংলাদেশের পাখির তালিকা, A checklist of the birds of Bangladesh.

Oriental Magpie Robin; National Bird of Bangladesh বাংলাদেশের বন্যপ্রাণীর তালিকাটি অনেক সমৃদ্ধ। এদেশ পাখির দিক দিয়...