গোবিন্দ গৌতমকে সশস্ত্র সীমা বল, যা আসলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী,
কাঞ্চনপুর জেলার আনন্দবাজারে হত্যা করেছে ৯ মার্চ ২০১৭ তারিখে। তিন দিন পর আজ রাষ্ট্রীয়
মর্যাদায় দুধা নদীর তীরে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষ হয়েছে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দিন
হোলি হওয়া সত্ত্বেও হাজারো মানুষ তাঁর শবযাত্রায় যোগ দেয়।
তাঁর মারা যাবার দিন থেকে তিন দিনে হাজারো মিছিল চলেছে পুরো নেপালে।
কাঠমান্ডুসহ নেপালের সর্বত্র হাজারো মানুষ শ্লোগান দিয়েছে ‘গোবিন্দ গৌতম
অমর হও’, ‘ঘাতকদের ফাঁসি
চাই’। আজ ভিড় ছিলো
নিয়ন্ত্রণের বাইরে। নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হত্যার নিন্দা জানিয়েছে এবং
গুরুতর উদ্বেগের সঙ্গে এই ব্যাপারে ভারত সরকারের উচ্চ কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ করেছে
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দোষীদের বিচারের সম্মুখীন করার জন্য ভারতকে উদ্যোগ নিতে বলেছে।
এই পরিস্থিতিতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী প্রচণ্ডের কাছে টেলিফোনে দুঃখ প্রকাশ করেছেন
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।
রাজপথে জনতাকে শান্ত করতে গত পরশু নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিমলেন্দু নিধি গৌতমকে শহীদ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। পার্লামেন্টে দেয়া বিবৃতিতে তিনি
গৌতমের পরিবারকে ইতিমধ্যে ১০ লাখ নেপালি রূপি ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দেন এবং তার সন্তানদের
শিক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্র নিয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে, সিপিএন-ইউএমএল-এর জ্যেষ্ঠ নেতা বামদেব গৌতম মঙ্গলবার বলেছেন
যে নেপাল সরকারের উচিত গোবিন্দ গৌতম হত্যার জন্য নেপালের কাছে ভারতকে দুঃখ প্রকাশ করা।
একই সময়ে, গৌতম বলেছিলেন যে ভারতের উচিত শোকাহত পরিবারকে ১০ মিলিয়ন টাকা ক্ষতিপূরণ
দেওয়া।
সুদূর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আঞ্চলিক পুলিশ অফিসের প্রধান ডিআইজি রোমেন্দ্র
সিং দেউজার মতে, গৌতমের দেহ থেকে গুলিটি উদ্ধার করা হয়েছে এবং কাঠমান্ডুর পুলিশ সদর
দফতরের অধীন কেন্দ্রীয় পুলিশ ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে কোন বন্দুক
থেকে গুলি করা হয়েছিল তা নির্ধারণ করতে।
ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ প্রতিরোধে গৌতম গোবিন্দের আত্মবলিদানকে শির নিচু
করে গোটা জাতি সম্মান জানিয়েছে। তাঁকে মহান শহীদ হিসেবে উল্লেখ করে সাংবাদিক কৃষ্ণ
মহরা লিখেছেন, মাতৃভূমি নেপালের মাটি, সীমানা এবং জায়গা রক্ষায় চির অম্লান হয়ে থাকবে
এই শহীদের আত্মবলিদান।
ঘটনার ছয় দিন পরও সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি এবং আন্তঃসীমান্ত
পরিবহন ও ব্যবসা-বাণিজ্য এখনও সম্ভব হচ্ছিল না।
বাংলাদেশের জনগণ কি কিছু শিখবেন এই ঘটনায়?