দ্বিপদ
নাম: Netta rufina (Pallas, 1773)
সমনাম: Anas
rufina Pallas, 1773
বাংলা নাম: লালঝুটি
ভুতিহাঁস,
ইংরেজি নাম: Red-crested
Pochard.
ভূমিকাঃ
বাংলাদেশের
পাখির তালিকায় Netta
গণে বাংলাদেশে রয়েছে ১টি এবং পৃথিবীতে রয়েছে ৩টি প্রজাতি। আমাদের আলোচ্য এই হাঁসটি
হচ্ছে লালঝুটি ভুতিহাঁস।
বর্ণনা:
লালঝুটি ভুতিহাঁস মাঝারি গড়নের হাঁস (দৈর্ঘ্য ৫৪ সেমি, ওজন ৯৮০ গ্রাম, ডানা ২৬ সেমি, ঠোঁট ৫ সেমি, পা ৪.২ সেমি, লেজ ৬.৭ সেমি)। ছেলে ও মেয়েহাঁসের
চেহারায় পার্থক্য আছে। প্রজনন ঋতুতে ছেলেহাঁসের
গোল মাথা মরচে-কমলা, ঘাড় কালো, কাঁধে সাদা
পট্টি ও বগল সাদা থাকে;
বুক ও পেট কালো হয়;
ডানায় স্পষ্ট সাদা ডোরা আছে ও ওড়ার পালক সাদা। ফ্যাকাসে
ঠোঁটের আগাসহ
ঠোঁটটি উজ্জ্বল লাল; চোখ উজ্জ্বল
লাল এবং পা ও পায়ের পাতা কালো বেড়সমেত কমলা-হলুদ। মেয়ে
ও প্রজননকাল ছাড়া ছেলেহাঁসের টুপি ও
ঘাড় বাদামি, গাল সাদা, পিঠ বাদামি ও
দেহতল পীতাভ; চোখ ও
ঠোঁট লালচে। মেয়েহাঁসের বাদামি ঠোঁটের আগা পাটল বর্ণের ও
অপ্রাপ্তবয়স্কের
ঠোঁট কালচে।
স্বভাব:
লালঝুটি ভুতিহাঁস মিঠাপানির হাওর, বিল,
বড় জলাশয় ও নদীতে বিচরণ করে; সাধারণত বড় বড় ঝাঁকে দেখা যায়। পানিতে
সাঁতার দিয়ে অথবা অল্প পানিতে গলা ডুবিয়ে আহার খোঁজে; খাদ্যতালিকায়
রয়েছে লতাপাতা, মুকুল, কচিকা-, জলজ ঘাস, আগাছার বীজ, জলজ পোকামাকড়, ক্ষুদ্র
শামুক-জাতীয় প্রাণী ও ব্যাঙাচি। এরা জোরে উড়তে
পারে এবং ভয় পেলে পানি থেকে খাড়া ওড়ে উঠে যায়। ছেলেপাখি
র্ককশ গলায় ডাকে: আওয়েহ গিক,পারর-পারর-পারর। গ্রীষ্মকালের
প্রজনন ঋতুতে মধ্য এশিয়ায় জলাশয়ের পাশে লতাপাতার মধ্যে নল ও ঘাসের স্তুপ
বানিয়ে তার ওপর পালকের বাসা করে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো জলপাই-ধূসর, সংখ্যায়
৭-১৪টি, মাপ
৫.৭ × ৪.২ সেমি।
বিস্তৃতি:
লালঝুটি ভুতিহাঁস বাংলাদেশের দুর্লভ পরিযায়ী পাখি; ঢাকা, রাজশাহী ও
সিলেট বিভাগের হাওরে শীতে থাকে। ইউরোপ ও এশিয়া
মহাদেশে; এশিয়ায়
ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, চীন, থাইল্যান্ড ও
ইন্দোচীনে এর বৈশ্বিক
বিস্তৃতি রয়েছে।
অবস্থা:
লালঝুটি ভুতিহাঁস বিশ্বব্যাপী বিপদমুক্ত পাখি। বাংলাদেশের
বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতি সংরক্ষিত।
বিবিধ:
লালঝুটি ভুতিহাঁসের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ লাল হাঁস (গ্রীক: Netta = হাঁস; ল্যাটিন: rufus
= লাল)।
বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী
জ্ঞানকোষে এই নিবন্ধটির লেখক ইনাম আল হক ও এম. কামরুজ্জামান।
আরো পড়ুন: