ফুলে-ফেঁপে উঠছে সম্পদ, খবর প্রথম আলোর |
ঋণখেলাপিদের হাতেঃ ‘দেশের ব্যাংকিং
খাত ২০ ঋণখেলাপির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই ২০ জনের কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা রয়েছে সাড়ে ২৯ হাজার
কোটি টাকা। আর এসময়ে পুরো ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৬ হাজার
২৮২ কোটি টাকা।’[১]
২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দুই লাখ ১৭
হাজার ৯৯২টি ঋণের বিপরীতে মোট চার হাজার ৬৮০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা সুদ মওকুফ করা হয়েছে। সরকারি ব্যাংকগুলোতে ঋণখেলাপির সংখ্যা ২৩ হাজার ৩৪৭ এবং বেসরকারি
ব্যাংকগুলোয় ঋণখেলাপির সংখ্যা ৭৬ হাজার ৩৩১।[২]
অনাদায়ী
রাজস্বঃ অনাদায়ী রাজস্বের পরিমাণ ৩৩ হাজার ৩১
কোটি টাকা।[২]
কেলেংকারিঃ ২০
ফেব্রুয়ারি, ২০১৩-এর প্রথম
আলোর খবরে জানা যায় প্রায় ১১০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে
পালিয়ে গেছেন বিসমিল্লাহ গ্রুপের মালিকেরা। বেসিক ব্যাংকে কেলেংকারির টাকার পরিমাণ ৩৫০০
কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের রূপসী
বাংলা শাখা থেকে হলমার্ক ছাড়াও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়া
অপর চার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হলমার্কের মতো ৮২৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগ
রয়েছে। এছাড়া নজিরবিহীন জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের তিন
হাজার ৬০৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে হলমার্কসহ ছয়টি ব্যবসায়ী গ্রুপ। এক সোনালী
ব্যাংকের রমনা কর্পোরেট শাখা থেকেই বিগত জোট সরকারের আমলে প্রায় ১৭ হাজার কোটি
টাকা ঋণ জালিয়াতি হয়েছে। এই টাকার মধ্যে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১০ হাজার
কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এছাড়া ৫০০ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে বেসরকারি সিটি
ব্যাংক লিমিটেড ও তার পরিচালনা পরিষদ।
কুইক রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্রঃ কুইক রেন্টালের নামে বর্তমান সরকারের
আত্মীয়স্বজন বিদ্যুৎ খাত থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।[৩] এছাড়া ২০১১-১২ অর্থবছরে ছয় হাজার
৩০৫ কোটি টাকা চলে যাবে কুইক রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্রের মালিকদের কাছে।
পাচার হয়ে
যাচ্ছে টাকাঃ মানবকণ্ঠ জানাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক
গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই)-এর তথ্য মতে, ২০০১ সাল ২০১০ সাল
পর্যন্ত দশ বছরে বাংলাদেশ থেকে মোট ১ হাজার ৪০৬ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। টাকার অঙ্কে যার
পরিমাণ ১ লাখ ১২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা।
জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থার (ইউএডিপি)
তথ্যমতে, প্রতিবছর বাংলাদেশ
থেকে পাচার হয় ৩০৬ কোটি ডলার, গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) তথ্যমতে, প্রতিবছর পাচার হয়
১৪০ কোটি ডলার। আর ক্রিশ্চিয়ান এইডের তথ্য মতে, শুধু যুক্তরাষ্ট্র
ও ইউরোপেই পাচার হয় বছরে ৩৯৭ কোটি ডলার। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের
সময় অর্থ পাচারের পরিমাণ বাড়ে।[৪]
বাংলাদেশ থেকে গত ৩৪ বছরে বা ১৯৭৬ থেকে
২০১০ সালের মধ্যে অন্তত দুই হাজার ৪৭০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। এই অর্থ সরিয়ে
নিয়ে করের সুখস্বর্গ হিসেবে পরিচিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ও অঞ্চলে গচ্ছিত রাখা হয়েছে।
প্রতি ডলার ৮০ টাকা ধরে হিসাব করলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় এক লাখ ৯৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।[৫]
সুইস ব্যাংকগুলোয় বাংলাদেশিদের অন্তত ২২
কোটি ৯০ লাখ সুইস ফ্রাঁ গচ্ছিত আছে। এ অর্থ প্রায় ২৪
কোটি ৫০ লাখ ডলার বা এক হাজার ৯০৮ কোটি টাকার সমান। এটি
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন ব্যাংকে যে অর্থ গচ্ছিত রাখা
হয়েছে, তার মোট পরিমাণ।[৬]
ব্যাংক ব্যবস্থার
মাধ্যমে গত চল্লিশ বছরে ২২ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে। এর মধ্যে
আমদানি ও রফতানি এ দুই প্রক্রিয়াকেই কাজে লাগানো
হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে এ
হিসাব পাওয়া গেছে।[৭]
কোটিপতিদের হাতে সব টাকা: দেশে কোটিপতির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, এই
শিরোনামে কোটিপতিদের বিস্তারিত খবর দিয়েছে দৈনিক যুগান্তর
পত্রিকা ১২ মার্চ ২০১৪তে। তাদের খবরে পাওয়া যাচ্ছে, কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাবে শুধু বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে কোটিপতি আমানতকারী রয়েছেন ৪৯
হাজার ৫৫৪ জন। এর
বাইরে আরও কয়েক লক্ষাধিক রয়েছেন কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এদের কোটি টাকার বাড়ি আছে, গাড়ি আছে এমনকি
নগদ টাকাও আছে কোটি টাকার ওপরে। যারা ব্যাংকের বাইরে আমানত রেখেছেন। যেমন- সঞ্চয়পত্র কিনে
রেখেছেন। বিভিন্ন
আর্থিক প্রতিষ্ঠান,
ডেভেলপার কোম্পানিসহ নানা ধরনের কোম্পানিতেও রয়েছে কোটি কোটি টাকার
আমানত। এদের অধিকাংশই কর ফাঁকি দিতে তথ্য গোপন করেছেন। স্বাধীনতা-উত্তর
বাংলাদেশে গত চার দশকে কোটিপতির সংখ্যা বৃদ্ধির চিত্র পর্যালোচনা
করলে দেখা যায়, প্রতিবার
ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে দুই থেকে তিনগুণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ২০১৩
সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন
সংখ্যা ৪৯ হাজার ৫৫৪। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৩ সালের জুন
শেষে ব্যাংকিং খাতে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজার ১৩৫ জন।
গত ৬ মাসের ব্যবধানে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৪১৯ জন।
২০০৯ সালে কোটিপতি ছিল ২৩ হাজার ১৩০ জন। এই হিসাবে গত পাঁচ বছরে কোটিপতি
আমানতকারী বেড়েছে ২৬ হাজার ৪২৪ জন। অপর এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে দেশে
কোটিপতির সংখ্যা ছিল মাত্র পাঁচজন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমানের আমলে (ডিসেম্বর ১৯৭৫) এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭ জন। জিয়াউর রহমান সরকারের
আমলে (ডিসেম্বর ১৯৮০) এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৮ জনে। তখন তাদের আমানতের
পরিমাণ ছিল ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ১০ শতাংশ। এরশাদ সরকারের পতনের
সময় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯৪৩ জন ও আমানতের
পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ শতাংশ। এ ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার প্রথম শাসনামলে ১৯৯৬
সালের জুনে কোটিপতির মোট সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৫৯৪ জন ও আমানতের পরিমাণ
ছিল প্রায় সাড়ে ২০ শতাংশ। পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার প্রথম শাসনামলে ২০০১
সালের সেপ্টেম্বর শেষে কোটিপতির মোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ হাজার ১৬২ জন। মহাজোট
ক্ষমতায় আসার আগে দুবছরের (২০০৭-০৮) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৫ হাজার
১১৪ জন এবং এরও আগে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে (অক্টোবর
২০০১-ডিসেম্বর ২০০৬) কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৮৮৭ জন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৮
সালে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হিসাব সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি।
২০০৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে এক কোটি টাকার ওপরে হিসাব সংখ্যা ছিল ২৩
হাজার ১৩০টি। ২০১০
সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষে এর সংখ্যা দাঁড়ায় ২৯ হাজার ৫৩৭টি। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে শেষে
এক কোটি টাকা লেনদেন হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩৫ হাজার ৬৯৮টি। ২০১২ সালে
ব্যাংকগুলোতে এক কোটির ওপরে থাকা হিসাব সংখ্যা ছিল ৪৩ হাজার ৭১২টি।[৮]
এছাড়া ২৪ জুন ২০১১
তারিখের
আমার দেশ পত্রিকা
থেকে
জানা
যায়
স্বাধীনতার আগে ২২ পরিবার ছিল কোটিপতি,
যার মধ্যে ৭ জন ছিলেন তত্কালীন পূর্ব
পাকিস্তানের। ১৯৭৫ সালে বিভিন্ন ব্যাংকে যাদের হিসাব
বা একাউন্ট ছিল তাদের মধ্যে কোটিপতি ছিলেন মাত্র ৪৭ জন। ২০০৯ সালের শেষে ওই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ১৩০ জনে। সূত্র মতে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ এই সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা
মনে করেন, কেউ
অবৈধভাবে বেনামে একাধিক হিসাবে টাকা রাখলে তাদের শনাক্ত করা কঠিন। কাজেই কোটিপতিদের প্রকৃত সংখ্যা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবের
তুলনায় অনেক বেশি। এছাড়া দেশে এমন অনেক কোটিপতি রয়েছেন
যাদের ব্যাংকে কোটি টাকা নেই, কিন্তু কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। তাদের নাম বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তালিকায় স্থান পায়নি।
বাংলাদেশ
ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিভিন্ন ব্যাংকে ২৩ হাজার ১৩০ জন
কোটিপতির মোট আমানতের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৫৪৪ কোটি টাকা।’[৯]
৩৬ পরিবারের হাতেঃ বাংলাদেশের
লুটপাটকারি ধনীক শ্রেণি জনগণের সব সম্পদ লুট করেছে। পাকিস্তানের ২২ পরিবার এখন ৩৬
পরিবারে রূপান্তরিত। এই ৩৬ পরিবারের হাতে জনগণের প্রায় সব সম্পদ কুক্ষিগত। এই
লুটেরা পরিবারগুলো আবার দেশপ্রেমিক বলে সার্টিফিকেট পাচ্ছে। বাংলাদেশের শীর্ষ ধনীর তালিকায় ১১৫ ধনীর ৭৬ জনই রাজনীতিবিদ।
লুটের খাত পোশাকঃ ২০১২ সালে ১৭ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক
প্রতিষ্ঠান ১০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করেছে। এইভাবে গত দুই দশকে কী পরিমাণ টাকা
লুট হয়েছে তার হিসাব কেউই জানে না। এই মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের প্রত্যেকটা টাকা হারামের টাকা। শ্রমিকের
ঘাম চুরি করে বানানো টাকা। শ্রমিকের রক্ত লাগা টাকা। শ্রমিকের
চোখের পানিতে ভিজা টাকা।
শ্রম আইন-২০০৬ অনুসারে মুনাফার ৫% শ্রমিকদের
হক। বাস্তবে এক পয়সাও শ্রমিকগণ পায় না। মরার পরে স্বীকৃতিই
পায় না আবার মুনাফার ভাগ পাবে কীভাবে? নতুন শ্রম
আইন-২০১৩
এর
খসড়া
অনুসারে
এই
৫%
এর
অর্থ
সরাসরি শ্রমিকদের না দিয়ে তথাকথিত ‘শ্রমিক কল্যাণ’ তহবিলে জমা
করার
বিধান
রাখা হইছে। অর্থাৎ মালিকদের অংশ
থেকে
যেখানে
‘শ্রমিক কল্যাণ’ তহবিল করার কথা, সেখানে
শ্রমিকদের
নগদ
প্রাপ্য
থেকেই
‘শ্রমিক কল্যাণ’ তহবিল বানানোর ধান্দা করা হয়েছে! কইয়ের তেলে কই
ভাজা
আর
কি! শ্রমিক মরলে এই শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকেই টাকা দেয়া হবে। মালিকের গাঁট থেকে কিছু আর
দিতে হবে
না।
বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিঃ প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি
টাকার ঋণ কেলেঙ্কারিতে সংকটে পড়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক। সরকার গঠিত
পরিচালনা পর্ষদ কোনো কিছুর তোয়াক্কা করেনি। ইচ্ছেমতো হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে।গ্রাহকদের অর্থ নিয়ে যা ইচ্ছা
তাই করেছে ব্যাংকটি।বাংলাদেশের ইতিহাসে এভাবে আর কখনোই ঋণ বিতরণ করা হয়নি। পর্ষদই
প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের সব আয়োজন করে দিয়েছে। পর্ষদের
মাত্র ১১টি সভায় তিন হাজার ৪৯৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ‘৪০টি দেশীয় তফসিলি
ব্যাংকের কোনোটির ক্ষেত্রেই
পর্ষদ কর্তৃক এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় না।’ বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে একটি বিশেষ
প্রতিবেদন তৈরি করে বলেছে, অধিকাংশ
ঋণই গুরুতর অনিয়ম করে দেওয়া হয়েছে।[১০]
১৯৯১ - ২০১৩ সময়কালীন বাংলাদেশে দুর্নীতি, তথ্যসূত্রঃ বণিক বার্তা |
১৯৯১-২০১৩ বিএনপি-লিগের
দুর্নীতিঃ গত চার সরকারের আমলে অর্থনৈতিক সুশাসনের
অভাবে দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে প্রায় ২ লাখ ২১
হাজার ৫০৭ কোটি টাকার। বিএনপির (১৯৯১-৯৬) সরকারের আমলে
পাঁচটি অর্থবছরের ঘোষিত
বাজেটের ১০ শতাংশ হারে মোট দুর্নীতি হয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকার। পরবর্তী সময়ে (১৯৯৬-২০০১) আওয়ামি লিগ আমলে তা দাঁড়ায় ১৬
হাজার ৩৫৩ কোটি টাকায়। দেশের
অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোট বাজেটও বাড়তে থাকে। পাশাপাশি বেড়ে যায় দুর্নীতির পরিমাণ।
বিএনপির সর্বশেষ শাসনামলে মোট বাজেটের ১৫ শতাংশ
হারে হিসাব নিয়ে দুর্নীতি দাঁড়ায় ৪২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকার। তবে আওয়ামি লিগের চলমান (২০০৯-১৩) শাসনামলে এর পরিমাণ সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এ মেয়াদে দুর্নীতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ
৫২ হাজার কোটি টাকা।[১১]
টাকা পাচার: গত ২০০২ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে অন্তত ১ হাজার ৬০৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা ১ লাখ ২৮ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা অবৈধভাবে বাইরে পাচার হয়েছে। ২০ জুন, ২০১৪ তারিখের দৈনিক যুগান্তরের এক প্রতিবেদনে জানা যায় ২০১৩ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিরা পাচার করে জমিয়েছে ৩২৩৬ কোটি টাকা।[১২] আর স্বাধীনতার পর গত চার দশকে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে গড়ে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা যা মোট দেশজ উৎপাদনের ৩০.৪ শতাংশ। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে গড়ে ৮০ কোটি ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬২৪০ কোটি টাকার মতো।[১৩]
টাকা পাচার: গত ২০০২ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে অন্তত ১ হাজার ৬০৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার বা ১ লাখ ২৮ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা অবৈধভাবে বাইরে পাচার হয়েছে। ২০ জুন, ২০১৪ তারিখের দৈনিক যুগান্তরের এক প্রতিবেদনে জানা যায় ২০১৩ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিরা পাচার করে জমিয়েছে ৩২৩৬ কোটি টাকা।[১২] আর স্বাধীনতার পর গত চার দশকে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে গড়ে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা যা মোট দেশজ উৎপাদনের ৩০.৪ শতাংশ। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে গড়ে ৮০ কোটি ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬২৪০ কোটি টাকার মতো।[১৩]
বাংলার
মজুর-কৃষকদের সেই সম্পদ এভাবে বেহাত হতে পারে না। জনগণের সম্পদ
জনগণেরই থাকবে, এই সমাজব্যবস্থা নির্মাণ করার সময় এখন।
২. দৈনিক প্রথম
আলো, ৩
জুলাই, ২০১৩,
১০. সুত্রঃ বাংলা
এক্সপ্রেস।
১১. বণিকবার্তা ডট কম, তারিখঃ ৫ ডিসেম্বর, ২০১৩; প্রথম পাতা; লিংকঃ http://www.bonikbarta.com/first-page/2013/12/04/24465
১২. দৈনিক যুগান্তর, ২০ জুন, ২০১৪; লেখার লিংক এইখানে।
১৩. দৈনিক যুগান্তর, ২৫ জুন, ২০১৪; লেখার লিংক এইখানে।
১২. দৈনিক যুগান্তর, ২০ জুন, ২০১৪; লেখার লিংক এইখানে।
১৩. দৈনিক যুগান্তর, ২৫ জুন, ২০১৪; লেখার লিংক এইখানে।