এই যে মানুষ, এই
দেখুন আমার হাতে ঝকঝকে টয়লেট টিস্যু
রূপসীর ন্যায় আপনাকে ভোলাতে পারে
আপনার চিত্ত ব্যাকুল হতে পারে তার নগ্নতায়
যেন আপনার সামনে উড়ছে দুটি নৃত্যরত প্রজাপতি
চলনবিলের বর্ষার উচ্ছ্বলিত স্রোতে,
এই যে আপনারা দেখুন, আমার
দু’আঙুলের মাঝখানে
ফিনফিনে শাড়ির মতো উড়ছে টয়লেট টিস্যু,
ফেলে দিন আপনার বর্জের সাথে বুড়িগঙ্গার জলে,
চলে যাক বঙ্গসাগরে, এজন্য অবশ্য আপনার
সাহসী হওয়া চাই।
টিস্যুর জন্মক্ষণের জন্য দুঃখ বা পরিতাপ করে কোনো ফায়দা নেই,
তার রূপের জেল্লা আছে,
তাকে বিলীন করে দিন বর্জের সাথে;
আর হে মানুষ, আপনি
দেখুন আপনি কী চান?
কী হে, জেনেছেন অচেতন দুই হৃদয়ের আলিঙ্গনে
যে সুর বাজে তার দশ মাস পরে মানবপোনাই জন্ম নেয়
আমার হাতে উড়ছে আপনার সন্তানের পতাকা,
এই সেই টয়লেট টিস্যু, ক্ষণস্থায়ি
রুমাল, একে ছুঁড়ে ফেলুন।
আমি যখন একা থাকি বা গোসল করি ঝরনায়,
একটি গান গাই অথবা নিজে কবিতা লিখি,
সেই কবিতা লেখা কাগজখানা এখন উড়ছে আমার হাতে;
এই হাত না থাকুক তবুও পুঁজিবাদের কালে উড়বেই এই টয়লেট
চিস্যু,
কবিতা আর টয়লেট টিস্যুর দূরত্ব আজ সামান্য,
এই ঘোষণার চেয়ে বড় সত্য বস্তুবাদে বড় বেমানান।
আর হে মানুষ, বুঝেছেন
কি, স্বাধীনতা আর সৃষ্টিশীলতার অর্থ
বুঝেছেন কি পানি আর জলের পার্থক্য
জলপাই আর জলহস্থির পার্থক্য
বুঝেছেন কি আকাল আর সকাল
কড়াইয়ের তেলে ভাজা আর উনুনে পোড়ার পার্থক্য
বুঝোছেন কি আপনার হাড় আর ঠুঁটো জগন্নাথের সম্পর্ক,
খুজেঁছেন কীভাবে সৌন্দর্য আসে শিল্পে,
নাকি আপনারা যেখানে আছেন সেখানেই থাকবেন আমৃত্যু?
হে মানুষ, শুনেছেন
কি বাঁচার গান,
জানেন কি ধুরন্ধরেরা নাচতে জানে কাপড় খুলে ইদুঁরের মতো
জানেন কি ঘানি টেনে কোনোদিন রাত শেষ হয় না,
বুছেছেন কি বাটি চালিয়ে নিজের খুঁটি তৈরি হয় না,
হাওয়া খায় হাওয়া ভবনের হাওয়া বিবিরা
আর আপনারা পান কাঙালি ভোজ, হায়রে কাঙাল
ঘোষক দল চেতনা দলের ভুষি মাল,
ঘুষি খেলে বাঁচে না।
আপনারাই পরিষ্কার রাখেন দু’দলকেই,
পরাজিত হবেন না আপনারা কখনো, যদিও মরতে পারেন টর্চার সেলে,
দেখবেন বারবার বছরে বছরে কারা যায় কারা আসে ক্ষমতাকেন্দ্রে;
ইতিহাসের রচনাবলিতে আপনারা থাকবেন না,
হে মানুষ, মুছে
ফেলুন শোষণের জন্মদাগ, মাটির ঢেলা নেন দুই হাতে,
একে ৪৭ও নিতে পারেন,
এ থেকেই জন্ম হবে রুটি-সভ্যতার।
এই যে মানুষ, আপনারা, যারা আমার সামনে,
যারা দিয়াশলাই, সিগ্রেট বাক্স, লাইটার চেনেন
যারা পাথর চেনেন, পাহাড়ের
গায়ে লিখতে পারেন
তারাই লিখুন আপনাদের নিজের ইতিহাস।
২৪.০৭.০৪. জাফরাবাদ, শংকর,
ঢাকা।