শনিবার, অক্টোবর ১২, ২০১৩

ঐতিহাসিক ক্ষমতাধর টয়লেট টিস্যু



এই যে মানুষ, এই দেখুন আমার হাতে ঝকঝকে টয়লেট টিস্যু
রূপসীর ন্যায় আপনাকে ভোলাতে পারে
আপনার চিত্ত ব্যাকুল হতে পারে তার নগ্নতায়
যেন আপনার সামনে উড়ছে দুটি নৃত্যরত প্রজাপতি
চলনবিলের বর্ষার উচ্ছ্বলিত স্রোতে,

এই যে আপনারা দেখুন, আমার দু’আঙুলের মাঝখানে
ফিনফিনে শাড়ির মতো উড়ছে টয়লেট টিস্যু,
ফেলে দিন আপনার বর্জের সাথে বুড়িগঙ্গার জলে,
চলে যাক বঙ্গসাগরে, এজন্য অবশ্য আপনার সাহসী হওয়া চাই।

টিস্যুর জন্মক্ষণের জন্য দুঃখ বা পরিতাপ করে কোনো ফায়দা নেই,
তার রূপের জেল্লা আছে,  
তাকে বিলীন করে দিন বর্জের সাথে;
আর হে মানুষ, আপনি দেখুন আপনি কী চান?

কী হে, জেনেছেন অচেতন দুই হৃদয়ের আলিঙ্গনে
যে সুর বাজে তার দশ মাস পরে মানবপোনাই জন্ম নেয়
আমার হাতে উড়ছে আপনার সন্তানের পতাকা,
এই সেই টয়লেট টিস্যু, ক্ষণস্থায়ি রুমাল, একে ছুঁড়ে ফেলুন।

আমি যখন একা থাকি বা গোসল করি ঝরনায়,
একটি গান গাই অথবা নিজে কবিতা লিখি,
সেই কবিতা লেখা কাগজখানা এখন উড়ছে আমার হাতে;  
এই হাত না থাকুক তবুও পুঁজিবাদের কালে উড়বেই এই টয়লেট চিস্যু,
কবিতা আর টয়লেট টিস্যুর দূরত্ব আজ সামান্য,
এই ঘোষণার চেয়ে বড় সত্য বস্তুবাদে বড় বেমানান

আর হে মানুষ, বুঝেছেন কি, স্বাধীনতা আর সৃষ্টিশীলতার অর্থ
বুঝেছেন কি পানি আর জলের পার্থক্য
জলপাই আর জলহস্থির পার্থক্য
বুঝেছেন কি আকাল আর সকাল
কড়াইয়ের তেলে ভাজা আর উনুনে পোড়ার পার্থক্য
বুঝোছেন কি আপনার হাড় আর ঠুঁটো জগন্নাথের সম্পর্ক,
খুজেঁছেন কীভাবে সৌন্দর্য আসে শিল্পে,
নাকি আপনারা যেখানে আছেন সেখানেই থাকবেন আমৃত্যু?  

হে মানুষ, শুনেছেন কি বাঁচার গান,
জানেন কি ধুরন্ধরেরা নাচতে জানে কাপড় খুলে ইদুঁরের মতো
জানেন কি ঘানি টেনে কোনোদিন রাত শেষ হয় না,
বুছেছেন কি বাটি চালিয়ে নিজের খুঁটি তৈরি হয় না,
হাওয়া খায় হাওয়া ভবনের হাওয়া বিবিরা
আর আপনারা পান কাঙালি ভোজ, হায়রে কাঙাল
ঘোষক দল চেতনা দলের ভুষি মাল,
ঘুষি খেলে বাঁচে না।

আপনারাই পরিষ্কার রাখেন দু’দলকেই,
পরাজিত হবেন না আপনারা কখনো, যদিও মরতে পারেন টর্চার সেলে,
দেখবেন বারবার বছরে বছরে কারা যায় কারা আসে ক্ষমতাকেন্দ্রে;
ইতিহাসের রচনাবলিতে আপনারা থাকবেন না,

হে মানুষ, মুছে ফেলুন শোষণের জন্মদাগ, মাটির ঢেলা নেন দুই হাতে,
একে ৪৭ও নিতে পারেন,
এ থেকেই জন্ম হবে রুটি-সভ্যতার।

এই যে মানুষ, আপনারা, যারা আমার সামনে,
যারা দিয়াশলাই, সিগ্রেট বাক্স, লাইটার চেনেন
যারা পাথর চেনেন, পাহাড়ের গায়ে লিখতে পারেন
তারাই লিখুন আপনাদের নিজের ইতিহাস।

২৪.০৭.০৪. জাফরাবাদ, শংকর, ঢাকা

শুক্রবার, অক্টোবর ১১, ২০১৩

বৃষ্টি তোমাকে দিলাম




নিথর হাওয়ারা জানে তুমি কাছে নেই
শহরের পাখিরা ভাবে প্রথম আলাপেই
ভাব হলো মহাসামাজিক দুজনার,
সামনে প্রয়োজন নেই দিন গুনবার;
সময়েরা ভেসে যাক উড়োজাহাজে,
দুজনের মাঝখানে ছোটছোট কাজে
জয় হোক ছোট ছোট নিভু ব্যর্থতার,

আমরা শুধু তোমার হবো আমরা হবো সবার।

বিলিয়ে দেবো রাজকোষের সমস্ত সম্পদ,
হটাতে হটাতে বাঁকের সমস্ত বিপদ
রঙিন জীবন যাবে সবার অন্তরে,  
নিত্যদিনের কাজে প্রেম সবার বন্দরে;
থাকবে না তোমাকে নিয়ে কারো হাহাকার
তুমি শুধু হাড় কুড়াবে তুমিই হবে সবার।

শক্ত করে দুহাত ধরে হাঁটতে থাকো এক পৃথিবীর সিঁড়ি
আলসেমিটার জানালায় চোখ রেখে আমরা ঘুরি ফিরি,
দেখেছি ওখানে হাজার জনের কালো গোলাপ চাপা পড়ে আছে,
তোমার সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা দ্বন্দ্বে মিলেছে
পৃথিবীকে হ্যাঁচকা টানে ফেলে
বদলে দেবো সব শ্রমিকেরা মিলে।

তোমার আঙিনায়,
দুঃখ, ন্যায়, আর ভরাকটালের জ্যোৎস্নায়  
বৃষ্টিভেজা আপেল আর কোকিলের কথা বলবো
কথার ফাঁকে আমরা গাইবো গান
‘বৃষ্টি তোমাকে দিলাম’,   
আর বৃষ্টির কাছ থেকে আমি ফিরিয়ে নিলাম
আজকের সকাল-সন্ধা, বাগানবিলাসের রূপ, ডালিমের ছন্দ,
তোমার সব কবিতা, চুম্বনের স্বাদ আর নৃত্যের অভিনবত্ব,
রাতের শহরে কবিতাপাঠ, পদ্মার বৃষ্টির রূপ ও অমরত্ব,
সুভাষ বোসের স্বপ্ন, রবীন্দ্রনাথের দুপুর, ঘৃতকাঞ্চনের কুমারীত্ব,  
আমি গহীনের হাত থেকে আনবো তুলে শ্রমসৃষ্ট মনি,
বইয়ের পাতায় দেখবো চাঁপা ফুলের মতো এক আহত অরণী
রাষ্ট্রের শাখা প্রশাখার সাথে করছে অসম যুদ্ধ 
এ আমার স্বপ্ন নয়, প্রত্যশা নয়; রক্তবোঝাই সত্য।

১৬.০৭.০৪, কুষ্টিয়া

মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৩

রাষ্ট্র হলো শ্রেণি-আধিপত্যের সংস্থা



রাষ্ট্রঃ মার্কসের মতে রাষ্ট্র হলো শ্রেণি-আধিপত্যের সংস্থা, এক শ্রেণি কর্তৃক অপর শ্রেণি পীড়নের সংস্থা, রাষ্ট্র হলো এমন শৃঙ্খলার প্রতিষ্ঠা, যাতে শ্রেণি সংঘাত নরম করে এই পীড়নকে বিধিবদ্ধ ও কায়েম করেরাষ্ট্র হলো শ্রেণি-বিরোধের অমিমাংসেয়তার ফল ও অভিব্যক্তি।[১]  
রাষ্ট্র এক শ্রেণি কর্তৃক অপর শ্রেণিকে দমনের যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়, এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে সেটা রাজতন্ত্রের চেয়ে একছিটে কম নয়।[২] 

শোষকেরা রাষ্ট্রকে অনিবার্যরূপেই শোষিতদের উপর তাদের শ্রেণির তথা শোষকদের শাসনের এক যন্ত্রে রূপান্তরিত করেতাই সংখ্যাধিক্যের তথা শোষিতদের উপর শাসন পরিচালনাকারী শোষকেরা যতক্ষণ থাকছে, ততক্ষণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রও অনিবার্যরূপে অবশ্যই হবে শোষকদের গণতন্ত্রএরূপ রাষ্ট্র থেকে শোষিতদের রাষ্ট্র অবশ্যই মৌলিকভাবে হবে ভিন্ন; সেটা অবশ্যই হবে শোষিতদের গণতন্ত্র, এবং শোষকদের দাবিয়ে রাখার যন্ত্র; আর কোনো শ্রেণিকে দাবিয়ে রাখার অর্থ সেই শ্রেণির প্রতি অ-সমান ব্যবহার, গণতন্ত্র থেকে তার বহিষ্কার।[৩]  

তথ্যসূত্রঃ
. লেনিন; রাষ্ট্র ও বিপ্লব; প্রগতি প্রকাশন, মস্কো; পৃষ্ঠা-৯
. লেনিন; রাষ্ট্র ও বিপ্লব; প্রগতি প্রকাশন, মস্কো; পৃষ্ঠা-৭৯
. লেনিন; সর্বহারা বিপ্লব ও দলদ্রোহি কাউতস্কি; গণপ্রকাশন, ঢাকা; পৃষ্ঠা ৩৩ ডিসেম্বর, ১৯৯০

রবিবার, আগস্ট ২৫, ২০১৩

পরাজিত পথিক


হেঁটে হেঁটে পেরিয়ে গেছি সীমান্তের হালকা কাঁটাতার

আড়মোড়া ভেঙে ভেঙে দিনগুলো হারিয়ে গেলে
পদতলে থেঁতলে গেছে আমূল পাথর;
এই ভাঙা পথে বুঝি পড়ে থাকে জ্ঞানবৃক্ষের পাকা ফল?

কোন পথে হেঁটে গেলে চিবুকের নিচে দাগ হয়?  
কোন পথে প্রাণেদের সাড়া পড়ে অবিরাম?

বহুকোষী টাকাগুলো পৃথিবীর ঘাড়ে চড়ে চেঁচিয়ে বলে
পরমাণু বোমা হলো মানুষের বাপ!!!

২৫ আগস্ট, ২০১৩; রাঙাচারার মোড়, মহাবিশ্ব

Featured Post

বাংলাদেশের পাখির তালিকা, A checklist of the birds of Bangladesh.

Oriental Magpie Robin; National Bird of Bangladesh বাংলাদেশের বন্যপ্রাণীর তালিকাটি অনেক সমৃদ্ধ। এদেশ পাখির দিক দিয়...