বৃহস্পতিবার, জুলাই ১৭, ২০১৪

বাঁচার রেখা ডাকছে তোমায়



তুমি কি শোনো,
কিছু কথা লুকানো আছে কিছু কথার পাশে
গোপন কথা শুনতে কেন হাজার মানুষ আসে
হৃদয় খোলা ছিল তোমার সিক্ত হাওয়ার কাছে

দেখলে পেতে,
সব হৃদয়ে হাজার কথার উলটো চলাচল
তোমার সাথে সেই কথাদের ব্যাপ্ত টলমল
ছিলো সবার সাথে আমার মাঠ পেরোনোর আশা
দুটি প্রাণের এক সকালের সফল ভালোবাসা;
মাঠের পরে মাঠ এসেছে গাঙের পরে গাঙ
তোমার সাথে এক বিকেলের সদ্য অভিমান

লাফ দিয়ে যাক,
সময়গুলো গভীর হাওয়ায় স্বপ্নগুলোর সাথে
ইর্ষাবিহীন আমরা হাঁটি তোমার ঈশারাতে;
সাঁতার কেটে
দেখেছিলাম সবাই মিলে অন্ধকারের জোর
তোমার চোখে দুলছিল এক উজ্জ্বলতার ঘোর

সাহস নিয়ে
করেছি লড়াই সকলে মিলে মঞ্চে বা বাস্তবে
তুমি ছিলে তাইতো ছিলাম তোমার অবয়বে;

নতুন আলো
ফুটলে দেখি দিকে দিকে নতুন করে বাঁচা
নতুন আকাশ নতুন আশা নতুন করে নাচা
তোমার হাতে ফোটা শতেক রঙিন ফুলের ঘ্রা
তোমাকে ডাকে আমাকে ডাকে শক্তি অনির্বাণ।

বজ্র আনার
চিন্তা জাগায় অন্ধকারে কোনো সফল শিখা
তোমায় ডাকে আমায় ডাকে অনুধাবনের রেখা

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৪. কুষ্টিয়া

বুধবার, জুলাই ১৬, ২০১৪

দিনবদলের প্রেম


বাঙলা বছরের শেষ প্রান্তরে সবকিছু বদলাতে শুরু করে
ক্ষয়িষ্ণু বর্ষা আর রাতের হালকা শীতে ঢেউ তুলে
যে জ্ঞান আসে তা তোমারই মতোনতুন ও সৃষ্টিশীল;
আমরা অবশ্য এসব বিষয়ে তেমন ভাবিনি;
কেননা খবরসন্ধানি আমরা লড়াইয়ের মাঠেই বুঝেছি
দুজন আর প্রতিদ্বন্দ্বি নই, হয়েছি সহযোগি;
হৃদয়ের ডাকবাক্সে জমেছে একঝাঁক ভালবাসা
আমরা অবশ্য খুঁজেছি আর কতটুকু গভীরে গেলে
শ্রমিক শ্রমিকের হয়, কৃষক কৃষকের,
নেতা জনগনের

শত শত মাইল দুরে থেকেই মুঠোফোনের মাধ্যমে আমাদের
লেনদেন হতো প্রিয় কিছু কথা ও কাজের,
কিছু শোরগোল, কটুতা, চটুলতা
এবং এসবের মাঝখানে কিছু অংশে শান্ত ঋজু ওলোটপালট
ভুলবোঝাবুঝি, আগ্রহ এবং সদিচ্ছার অভাব আর
তোমার অন্বেষণে একা একা শহরের রাস্তায় হেঁটে বুঝতে পারা
প্রেমের অভাববোধ

আমাদের সময়ের বোধ ও বুদ্ধি আমাদেরকে পৌঁছালো
একুশের দুরন্ত নেশায়, বিদ্রোহের কাব্যময় গানে
আমরা ক্ষয়েছি যারা সেইসব বিহ্বলতার দোরগোড়ায়
যা দুজনের শিল্পিত জীবনে এনেছিলো কালোত্তীর্ণ ছায়ামূর্তি,
সেই আমরা ব্যর্থতার জীবনানন্দীয় টানে সম্মোহিতের মতো জেনেছি
ত্রিভুজের তিনটি চিত্রের সমষ্টি কবিতার দুটি হৃদয়ের সমান,

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৪ কুষ্টিয়া

বিষের পেয়ালায় পোড়া দেশ


(রোমানাকে)

এমন বৃষ্টি হয়নি বহুকাল
শুরু হলো তোমাদের হাঘরে আকাল
বৃষ্টি, একগুঁয়ে ছন্নছাড়া অবিশ্রাম তুমুল
কদিনেই কাজ নেই, ঘর ও প্রান্তর বদলালো আমূল;
অন্ধকারে ঝাপসা আলো রুদ্ধ পথঘাট
কোথায় পালাবে তুমি, চৌদিকে আবদ্ধ কপাট,
কে তোমাকে দিতে পারে প্রাণের সাম্পান
কে তোমাকে দিতে পারে বুকভরা গান
তোমার চোখ ভরা এতো আভিমান;
দখিনের গাছগুলো দুলছে হাওয়ায়
চতুর্দশি ছিলে তুমি পূর্ণ কামনায়
কুমারি শরিরে তুমি পাওনিকো জীবনের স্বাদ
দেখেছিলে তালবন তালশাঁস, অনভিজাত
বাড়ির পাশে ঝোঁপে-ঝাড়ে বেঁচে থাকা
অজস্র কীট মানুষ নামের, তুমি তাদের থেকে ঢের বেশি একরোখা
ভালোবাসায় জন্ম নেয়া একুশ শতকের নারী
তুমি জান কি, তোমার মতোই দেহের তোমার প্রধানমন্ত্রি;
সেও পারেনি তোমাকে বাঁচাতে;
তোমার মা তো সামান্য এক বধু সংসারে টিকে আছে কোনোমতে,
তোমার বাবা পালিয়েছে বহু আগে কারাগার থেকে,
চতুর্দশি তুমি একেএকে
সংসার সন্তান ধর্ম রাষ্ট্র না দেখেই, মানসচক্ষে
দেখেছো পাশের বাড়ির শিঁকেয়
ঝুলে থাকা গোপন সম্বল থেকেই
জন্ম হয় জগত সংসার
আর
ভেবেছো, এক মুঠ চাল পেলে
রান্না হবে পুকুরের জলে
তারপর স্বপ্নে হবে খাওয়া
হাওয়া আর হাওয়া
কোনো ভাঁড়
বা চাটুকার
মন্ত্রী তোমাকে রক্ষা করবে না,
সরাতে পারবে না তোমার যন্ত্রণা।

তুমি পছন্দ করতে পাড়া বেড়াতে,
ফুল কুড়াতে, নোলকে নাকে রেখে ফুল পরতে,
আদুরে বিড়াল ছানাকে খেলায় মাতাতে আনমনে;
তবুও এই জ্বরজীর্ণ বাঙলার এক কোণে
তুমি ঠাঁই না পেয়ে,
এক কৌটা বিষ হাতে ঢুকে পরলে লাফায়ে
অন্ধকার গহ্বরে, তোমার অভিমানী হাসিকে দিলে জলাঞ্জলি,
এক য কালো মৃত্যু ভীত পল্লির
ক্ষুদ্রতম গৃহে, তোমার জীবনে এক টুকরো
পরহিতব্রত ছিলো কী না কারো
কাছে এ-প্রশ্ন জাগেনি,
তদুপরি তুমি নিরাশ হতে চাওনি,
তবু কেন শেষ মুহূর্তের কামনায় চলে গেলে মৃত্যুর আঙিনায়,
তুমি আর কখনো আমাদের জানালায়
উঁকি দিবে না, কেননা তুমি সহজেই
ছুঁড়ে ফেলেছো বিষাক্ত পল্লীকে শুরুতেই
আর আমরা আজো আছি বিষের মাঝখানে
হাতে বিষের পেয়ালা,
ভীতু আত্মভোলা।

১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৪; কুষ্টিয়া

Featured Post

বাংলাদেশের পাখির তালিকা, A checklist of the birds of Bangladesh.

Oriental Magpie Robin; National Bird of Bangladesh বাংলাদেশের বন্যপ্রাণীর তালিকাটি অনেক সমৃদ্ধ। এদেশ পাখির দিক দিয়...