ফরাসি বিপ্লবের পরে ফ্রান্সের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে
দিয়েছিল ইউরোপীয় বুর্জোয়ারা। যুদ্ধ চাপিয়ে মুনাফা
কামানো এবং বিপ্লব বিরোধিতার অভিজ্ঞতা তাঁদের তখনই
হয়েছিল। ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের পর রাশিয়াকে আক্রমণ করতে তাই ইউরোপীয় বুর্জোয়ারা দেরি করেনি। ইউরোপে বিভিন্ন দেশের সরকার এবং
প্রতিষ্ঠানকে উচ্চ সুদে ঋণদানই ছিল রথচাইল্ড পরিবার নামে একটি সাম্রাজ্যবাদী সন্ত্রাসী
পরিবার। এর পাশাপাশি পণ্য পরিবহনের ব্যবসাও ছিল তাদের। বলা হয়ে থাকে, দুই দেশের
মধ্যে যুদ্ধ বাঁধিয়ে দিয়ে উভয় সরকারকেই ঋণ দিতো রথসচাইল্ড। বিনিময়ে বন্ধক রাখতে
হতো রাষ্ট্রের জমিজমা আর ধন-সম্পদ।
ফরাসি বিপ্লবের পরে ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের
মধ্যকার ওয়াটারলুর যুদ্ধে দুই দেশকেই ঋণ দিয়েছিল এই যুদ্ধংদেহী বর্বর পরিবারটি।
সেইই যুদ্ধে কেবল ১৮১৫ সালেই ইংল্যান্ডের মিত্রদের ৯৮ লাখ পাউন্ড ঋণ দিয়েছিল
তারা, বর্তমান হিসাবে তা প্রায় ১ হাজার ১ কোটি মার্কিন ডলারের সমান। সেইসময় এর
পাশাপাশি আরো একটি লাভজনক ব্যবসা চালাতে পেরেছিল রথসচাইল্ড পরিবার। ওয়াটারলুর
যুদ্ধে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে সব ধরনের জাহাজ চলাচলই বন্ধ ছিল। চলতো কেবল এই
পরিবারটির জাহাজ। কারণ দুই দেশের সরকারই তাদের জাহাজের নিরাপত্তা দিত।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইউরোপের বিশেষভাবে ফ্রান্স এবং ইটালির কমিউনিস্ট
পার্টি ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী। কিন্তু এই মেরুদণ্ডবিহীন নপুংসক সংশোধনবাদীরা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ক্ষমতা দখল না করে বসে বসে আঙুল চুষছিল। যার ফলাফল
বিশ্বের নিপীড়িত জনগণের জন্য খুব ক্ষতিকর হয়েছিল।
অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকছে বুর্জোয়ারা। লেনিন যে বলেছিলেন সমস্ত জ্ঞানকে
কাজে লাগিয়ে প্রলেতারিয়েত হয়ে উঠবে অগ্রণী শ্রেণি, তা বাংলাদেশে কী পর্যায়ে আছে?
বাংলাদেশে মাঝে মাঝেই শ্রমিক ও কৃষকগণ
আন্দোলনে অস্ত্র হাতে তুলে নেন, কিন্তু তারপরও শান্তিবাদী হয়ে থাকে কেন
কমিউনিস্টরা? কেন তারা দুদিনের হরতাল পর্যন্ত ডাকে না? এই প্রশ্নের উত্তর পেলেই
বোঝা যাবে এইখানে কমিউনিস্ট নামধারী নেতারা মার্কস-লেনিনকে আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে
ফেলেছেন!
বাংলাদেশে সাম্রাজ্যবাদ প্রধান শত্রু। এখানে মৌলবাদ তাঁর জানের
দোস্ত। ফুকুয়ামার মতবাদ অনুসারে সাম্রাজ্যবাদ চলছে “সভ্যতার
সংঘর্ষ”কে কার্যকর করতে। এই দ্বন্দ্বের জন্য সাম্রাজ্যবাদ মৌলবাদকে
পৃষ্ঠপোষকতা করে। সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধ শক্তিকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারলে
আমরা সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াই চালাতে পারব। দ্বন্দ্ব নিয়ে যদি বস্তু তৈরি হয় তবে
সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধ শক্তিকে মিলেই একটি বস্তু তৈরি হয়।
তথ্যসূত্র
১. রাশেদ শাওন, ৬ জুন, ২০১৭, গোনিউজ২৪.কম, “বিশ্বের সবচেয়ে ধনী, সবচেয়ে রহস্যময় রথচাইল্ড পরিবারের উত্থান”, ইউআরএল: https://www.gonews24.com/international/news/26734/